অতিথি পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

অতিথি পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ঝালকাঠি সদর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে সুগন্ধা, বিশখালী, গাবখান ও ধানসিঁড়ি নদী। এ চার নদীর মোহনার পশ্চিমদিকে গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন, দক্ষিণে পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং উত্তর-পূর্ব কোণে ঝালকাঠি পৌর এলাকা। শীতকালের অতিথি পাখিরা আশ্রয় নিয়েছে বিশখালী নদীর পশ্চিম পাড়ে গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ভাটারাকান্দা ও পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দিয়াকূল গ্রামের বিশখালী নদী তীরবর্তী এলাকায়।

এসব অতিথি পাখিসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী বিভিন্ন জাতের পাখি রক্ষায় জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ৩টি স্পিড বোটে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ‘পাখি শিকারকে না বলি’ প্রচারাভিযানে অংশ নেয়। পাখি রক্ষায় বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত বাণী প্রচার, জেলার ৪ থানার অফিসার ইন-চার্জদের নম্বর সম্বলিত ফেস্টুন জনবহুল স্থানে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নৌপথ ও নদী তীরবর্তী বাজারসমূহে এ প্রচারাভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রায় ২০ কিলোমিটারজুড়ে জনসচেতনতা গড়তে এ অভিযান পরিচালনা করেন ব্যবসায়ী শামসুল হক মনু।

জানা যায়, প্রতিবছর শীতে দূর-দূরান্ত থেকে শীতের পাখিরা আসে আমাদের দেশে। ভ্রমণপিপাসু মানুষ পাখি দেখতে ভিড় করে বিভিন্ন জলাশয়ে। পাখিদের কলকাকলি প্রকৃতির শোভা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। আবাসিক ও অতিথি পাখি মিলে আমাদের দেশে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির পাখি আছে। এরমধ্যে ৩৬০ প্রজাতি আবাসিক। বাকি ৩০০ প্রজাতি অতিথি পাখি। সব অতিথি পাখি শীতের সময় আসে না। ৩০০ প্রজাতির মধ্যে ২৯০টি শীত মৌসুমে আসে ও ১০টি প্রজাতি থেকে যায়।

 

অতিথি পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
ব্যবসায়ী শামসুল হক মনু জানান, শীত এলেই এসব জলাশয়, নদীর তীরের নিরাপদ স্থানসহ বিভিন্ন হাওর, বাওড়, বিল ও পুকুর পাড়ে চোখে পড়ে নানা রংয়ের নাম জানা, অজানা পাখির। অথচ বেআইনিভাবে শিকার হচ্ছে এসব পাখি। অতিথি পাখি আমাদের বন্ধু, ঐতিহ্য, গর্ব ও প্রেরণা। পাখিগুলোকে অচেনা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের বন্ধুসুলভ আচরণ করা দরকার। পাখিগুলো রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও জানান, পাখি শিকার করা, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, ফসলে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ প্রভৃতি অতিথি পাখির প্রধান শত্রু। আমাদের দেশে প্রতিনিয়তই পাখির আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। একশ্রেণির লোভী শিকারীর নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য দুর্লভ প্রজাতির অতিথি পাখি। জালের ফাঁদ পেতে, বিষটোপ এবং ছররা গুলি দিয়ে নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার চলছে প্রতিনিয়ত। কেউ শখের বশে আবার কেউ বাজারে বিক্রির জন্য অতিথি পাখিদের ধরে চলেছে।

ঝালকাঠি সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসাম্মাৎ জেবুন্নেছা জানান, আশঙ্কাজনক হারে আমাদের দেশে শীতে পাখি আসার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমরা অতিথি পাখি দেখতে গেলেই পাখির খুব কাছে যেতে চাই। ঢিল মেরে আতঙ্কিত করে পাখি ওড়ার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে চাইলে তা পাখির অবাধ বিচরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এছাড়াও নদীপথে লঞ্চ, স্টিমার, স্পিড বোট, ট্রলারের শব্দেও পাখির আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তাই আইন প্রয়োগে কঠোর হতে হবে। প্রশাসনের সঙ্গে আমাদেরও সহযোগিতা করতে হবে।
লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget