নওগাঁয় বেড়েছে শীতজনিত রোগ

নওগাঁয় বেড়েছে শীতজনিত রোগ

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁয় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত এক সপ্তাহে শীতজনিত রোগ, বিশেষ করে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় ৫৪ জন এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ২৮২ জন শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে নওগাঁর ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৪১৫ জন এবং ডায়রিয়া আক্রান্ত ৯০৫ জন ভর্তি হয়েছে। এসব রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।
সারা দেশে জেকে বসেছে শীত। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা। গত কয়েকদিন থেকে সূর্যের দেখা নেই। দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। হঠাৎ করে শীতের প্রকোপে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। নওগাঁ সদর হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। শীতজনিত রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে জায়গা স্বল্পতার কারণে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

শহরের হাট-নওগাঁ মহল্লার গৃহবধূ জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, দুই দিন আগে বাচ্চার জন্ম হয়েছে। পরদিন থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকায় দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। শিশু ওয়ার্ডের ইনকিউবেটরে বাচ্চাকে রেখে তাপ দিয়ে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের সবুজ বলেন, তার সন্তানের (মানিহা) বয়স এক বছর। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে হঠাৎ করেই বাচ্চা বমি করে। সেই সঙ্গে পাতলা পায়খানা। স্যালাইন দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছিল না। অবশেষে রোববার সকালে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। স্যালাইন দেয়ার পর কিছুটা সুস্থ হয়। গত কয়েক দিনের ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাচ্চার সমস্যা শুরু হয়।

শিশু ওয়ার্ডের সেবিকা আমিনা আক্তার বলেন, গত কয়েকদিন থেকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হঠাৎ শীতে ৭-৮ মাস বয়সী শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ১০ বেডের জায়গায় হলেও ৪০-৫০ শিশুকে সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ম্যান পাওয়ার কম থাকায় বাড়তি সময় দিতে হচ্ছে।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মুনীর আলী আকন্দ বলেন, শীতজনিত কারণে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় হাসপাতালে ২ গুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। শীতে যেন ঠান্ডা না লাগে এ জন্য গরম পোশাক ব্যবহার ও গরম খাবারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শীতে শ্বাসকষ্টে যারা ভোগেন তারা বেশি সর্তক হয়ে চলতে হবে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ আছে। জনবল সঙ্কট থাকায় ডাক্তার ও সেবিকা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে কিছু দিনের মধ্যে জনবল পাওয়া যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget