মো.হারুন আল রশীদ: নওগাঁর ধামইরহাটে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ারোধ করতে এক আমেরিকা প্রবাসীর অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশী বংশোভুত আমেরিকান নাগরিক মো.সাজ্জাদ হোসেন রাসেল এলাকার অসহায় সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। এলাকাবাসী তার এ মহৎ কাজ কে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
জানা গেছে,ধামইরহাট পৌর সভার অন্তর্গত মালাহার গ্রামের মরহুম আব্দুল কুদ্দুস এর দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মো.সাজ্জাদ হোসেন রাসেল প্রায় ৮ বছর আগে ডিভি লটারীর মাধ্যমে আমেরিকা পাড়ি জমায়। বর্তমানে সে বাংলাদেশী বংশোভুত আমেরিকান নাগরিক। তার মা সাহারা বানু ধামইরহাট পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরে এফভিএ পদে কর্মরত থাকাবস্থায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বর্তমানে তার ছোট ভাই রাজু আহমেদ ও স্ত্রী ছাড়া কেউ নেই। অকালে বাবা মাকে হারিয়ে ওই পরিবার অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। এব্যাপারে সাজ্জাদ হোসেন রাসেল বলেন,বাবা মাকে সেবা করতে না পেয়ে মনের মধ্যে সব সময় খারাপ লাগে। সেই উপলদ্ধি থেকে এলাকার অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সেবা করার মাধ্যমে সে বাবা মাকে খুঁজে পেতে চাই। সেই থেকে সময় পেলে শিশু শিক্ষার্থী ও তার অসহায় মাদের কে বিভিন্নভাবে সেবা প্রদান করছি। তিনি আরও বলেন, আমেরিকাতে মায়েরা বেশি সচেতন। যে পরিবারে মা বেশি সচেতন সেই পরিবারের শিশুরা লেখাপড়া এগিয়ে যায। তাই তিনি শিশুদের পাশাপাশি মাদেরকেও সচেতন করার কাজ করছেন। ইতোমধ্যে তিনি ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মালাহার,দাদনপুর ও বাসুদেবপুরে অধ্যয়নরত শিশু শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ারোধ ও মাদেরকে সচেতন করার লক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। উপকরণের মধ্যে রয়েছে খাতা,কলম,টিফিন বক্স,থালা,মগ,দেওয়াল ঘড়ি,স্কুল ব্যাগ,ফুটবল। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মালাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বারের মতো শিক্ষার্থীদের মাঝে আবার শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। বিতরণকৃত উপকরণের মধ্যে ছিল ১০০পিচ খাতা ও কলম,টিফিন বক্স ১০টি,মগ ১০টি,দেওয়াল ঘড়ি ৫টি এবং পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে বিস্কুট। এছাড়া অসহায় ৩জন মাকে ৩টি শাড়ি প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মালাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক চৌধুরী,সহকারী শিক্ষক সামছিআরা বেগম,ফেরদৌসী আরা,সেলিনা খাতুন,হাবিবা খাতুন এবং সমাজসেবী নাজমুল ইসলাম। এদিকে সাজ্জাদ হোসেন রাসেলের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম মোস্তফা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন