চাঁদপুরে গ্রাম আদালত পরিদর্শনে স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান
বিশেষ প্রতিবেদক: ২১ নভেম্বর ২০১৯ স্থানীয় সরকার উপপরিচালক
মোহাম্মদ শওকত ওসমান মতলব-উত্তর উপজেলার অন্তর্গত ফতেপুর-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম
আদালত সহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম আদালত
বিষয়ক জেলা কর্মকর্তা (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস। ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী উপপরিচালক
সহ অন্যান্যদের স্বাগত জানান। এ সময় ইউপি সচিব দেওয়ান আব্দুল ওহাব ও গ্রাম আদালত সহকারী
মোঃ আল কামাল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে
স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান গ্রাম আদালতের বিভিন্ন নথি ও রেজিস্টার
পরিবীক্ষণ করেন। মামলার নথি সংরক্ষণের ব্যবস্থা দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু
বেশীর ভাগ মামলা বিধি-৩১ এ নিস্পত্তি হওয়ায় কিছুটা উস্মাভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,
আদালত গঠনের মাধ্যমে এজলাসে বসে মামলাগুলো নিস্পত্তি করা না হলে গ্রাম আদালতের উপর
মানুষের আস্থা ধরে রাখা কঠিন হবে। মামলার গুণগত মান বজায় রাখতে হলে যথানিয়মে আদালত
গঠন করে এজলাসে বসে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে যাতে মানুষ উপলদ্ধি করতে পারে
যে, এটা একটা আদালত।
তিনি
আরো বলেন, গ্রাম আদালতের বিচারিক-সেবার সঙ্গে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংযোগ স্থাপনে ইউপি
সচিব এবং গ্রাম আদালত সহকারীকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। গ্রাম আদালতের
সেবাপ্রার্থীকে তার সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম আদালত আইনের আলোকে সঠিক পরামর্শ এবং
প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করাই হবে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সর্বোপরি আইনি ও বিচারিক-সেবা
বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সেবাপ্রার্থীদের আইনি সুরক্ষা লাভের অধিকার
নিশ্চিত করতে হবে।
উপপরিচালক
আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত
করতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদে আগত নারী-পুরুষ প্রত্যেকের জন্য সমমানের
সেবা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন। ব্যাক্তিগত পরিচয়
এবং সম্পর্কের উর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষ আচরণ করুন। সেবাপ্রার্থী আপনার কাছে এলে আন্তরিকতার
সাথে তাকে গ্রহণ করুন এবং তার কথাগুলো গুরুত্ব দিয়ে শুনুন। এখন দিন বদলের সময়। আমাদেরও
বদলাতে হবে এবং জনসেবায় সর্বোচ্চ গুণগত মান বজায় রাখতে হবে। জনগণের পাশে আমাদের দাঁড়াতে
হবে।
ফতেপুর-পূর্ব
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের গ্রাম আদালতে জুলাই-২০১৭ হতে অক্টোবর-২০১৯
পর্যন্ত মোট ২২৪ টি মামলা দায়ের এবং ২২০ টি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। এখানে মাসে গড়ে
৭.৭ টি মামলা দায়ের এবং ৭.৬ টি নিস্পত্তি হয়েছে। গত দুই বছর পাঁচ মাসে এ আদালতে মোট
৯,৬০,২১৬ (নয় লক্ষ ষাট হাজার দুই শত ষোল) টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করা হয়েছে যা মামলার
ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষদের যথানিয়মে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসে মোট ১০ টি মামলা
দায়ের হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন উচ্চ আদালত হতেও গ্রাম আদালতে মামলা রেফার হয়ে আসছে।।