ঝালকাঠিতে গভীর রাতে বাল্যবিয়ে, ভ্রাম্যমান আদালতে মা ও চাচাকে আর্থিক জরিমানা

ঝালকাঠিতে গভীর রাতে বাল্যবিয়ে, ভ্রাম্যমান আদালতে মা ও চাচাকে আর্থিক জরিমানা

রিপোর্ট : ইমাম বিমান:: ঝালকাঠিতে গভীর রাতে উপজেলা প্রশাসনের হস্থক্ষেপে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীর বাল্যবিয়ে দিতে গিয়ে কিশোরীর মা ও চাচাকে আর্থিক জরিমানা করেছে ঝালকাঠির ভ্রাম্যমান আদালত। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক দশটার সময় ঝালকাঠি পৌর এলাকার ফকিরবাড়ী সড়ক সংলগ্ন জাকির হাওলাদারের বাড়িতে তার ভাইয়ের স্ত্রী ভাবীকে নিয়ে কিশোরী (অপ্রাপ্তবয়স্ক) মেয়ে ভাতিজিকে স্থানীয় বিবাহ রেজিস্ট্রী কাজী বশিরের সহযোগীতায় বিয়ে দেয়। ভাতিজীকে বিয়ে দেয়ার সংবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ জানতে পারেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিয়ের সত্যতা পাওয়া ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযোগ এনে কিশোরীর মা রিনা বেগম ও কিশোরীর চাচা জাকির হাওলাদারকে ১৫ হাজার টাকা করে দুইজনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে মুছলেকা আদায় করেন।


এ বিষয় ঝালকাঠি জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার নাসরিন আক্তার জানান, গতকাল রাত আনুমানিক ১০টার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজের নির্দেশে বাল্যবিবাহের সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থাল শহরের ফকিরবাড়ী এলাকার জাকির হোসেনের  বাসায় গিয়ে বাল্যবিবাহের সত্যতা জানতে পারি। পরে এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করলে কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনা স্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ মহাদ্বয় সহ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট মাছুমা রিমা ও সহকারী কমিশনার ভূমি লুৎফুননেচ্ছা উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে কিশোরী মেয়েকে উদ্ধার করা হলেও বরিশাল থেকে বাল্যবিবাহ করতে আসা বর পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযান চালিয়ে ১৬ বছর বয়সী একটি কিশোরী মেয়েকে বাল্য বিবাহ দেয়ার অপরাধে কিশোরীর মা ও চাচাকে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করে, ভ্রাম্যমান আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদের দুজনকে ৩০হাজার টাকা শাস্তি মূলক জরিমানা করেন সেই সাথে কখন নিজ সন্তানকে অপ্রাপ্তবয়সে অর্থাৎ কখনও বাল্য বিবাহ দিবো না মর্মে মুছলেকা দেন। এ সময় এলাকায় মহিলা পৌর কাউন্সিলর নাছিমা কামাল উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো জানান, উপজোলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে রাত আনুমানিক পৌনে দশটার সময় বাল্য বিবাহের ঘটনা স্থলে গিয়ে কিশোরী মেয়েকে পেলেও বরিশাল থেকে বাল্যবিবাহ করতে আসা একটি ঔষধের (স্কয়ার ফারমাসিটিক্যাল) কম্পানিতে কর্মরত বর জিসান হাওলাদার তার পক্ষের লোকজন নিয়ে আমাদের আশার সংবাদ পেয়ে আগেই ঘটনা স্থান থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারি। তবে বাল্যবিবাহ কার্যক্রমে সহযোগীতা সহ বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করার অপরাধে কাজী বশিরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করার হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্বস্ত করেন।

এ বিষয় অনুসন্ধানে জানাযায় যে, পোনাবালিয়া ইউনিয়নের বাওতিতা গ্রামের নাছির হাওলাদারের অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরী মেয়ের বিয়ের ব্যাবস্থা করেন মেয়েটির মা রিনা বেগম। মেয়েটি (অপ্রাপ্তবয়স্ক) কিশোরী হওয়ায় এলাকাবাসী বাল্যবিবাহে বাধা দেয়। এলাকাবাসীর বাধার সম্মুখীন হয়ে রিনা বেগম তার মেয়েকে সেখানে বিয়ে দিতে না পেরে সেখান থেকে তার কিশোরী মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গ্রাম থেকে ঝালকাঠি শহরের ফকিরবাড়ী সড়ক সংলগ্ন মেয়ের চাচা জাকির হাওলাদারের বাড়িতে এসে জাকির এবং ঐ এলাকার স্থানীয় কাজী বশির উদ্দীনের সহযোগীতায় জাকিরের বসত ঘরে পুনরায় ও বিবাহ কার্যক্রম শুরু করেন।

লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget