নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর নিয়ামতপুরে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ১জন নিহত এবং ৬জন আহত হয়েছে। নিহতের নাম ওয়াহেদ আলী। তিনি উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং চকমনসুর গ্রামের মৃত: তমির উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, গত ১০ আগষ্ট নওগাঁ জেলা বিএনপির আহবায়ক মো. হাফিজুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ন আহবায়ক আবু জাহিদ ও মো. রফিকুল আলম রফিক কর্তৃক স্বাক্ষরিত ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এর প্রথম বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয় গত ১৬ আগষ্ট সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা: সালেক চৌধুরীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয় বিরোধ হয় গত ২২ আগষ্ট দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এরপর সর্বশেষ গত রোববার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের খড়িবাড়ী হাটে নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বর্তমান নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে সভা চলাকালীন সময় বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ন আহবায়ক ইমরান হোসেনের নেতৃত্বে ১০/১২জন অজ্ঞাত ব্যক্তি হেলমেট মাথায় পরা অবস্থায় বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আতর্কিতভাবে আক্রমন করে। এতে মোস্তাফিজুর রহমানের গ্রুপের বাহাদুরপুর ইউপির ৭নং ওয়ার্ড সদস্য চকমনসুর গ্রামের মৃত: তমির উদ্দিনের ছেলে ওয়াহেদ আলী, একই ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে সোহেল, সাদাপুর গ্রামের মৃত: বিয়ানতুল্লাহর ছেলে মো. আব্দুল আজিজ, বদলপুর গ্রামের মৃত: চান্দা মন্ডলের ছেলে নূরুননবী নূহু আহত হয়। তাদেরকে সাথে সাথে গুরুত্বর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও আহত হয় মোস্তাফিজুর রহমানের গ্রুপের পাড়ইল ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের নিযাম উদ্দিনের ছেলে মনজুর রাসেল এবং এমরান গ্রুপের বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের মৃত: আফাজ উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন এবং রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের মৃত: নজরুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম ছোট বাবু। এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের গ্রুপের বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াহেদ আলীর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে মারা যায় এবং নূরুন নবী নূহুর অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা বাহাদুরপুর ইউনিয়নের খড়িবাড়ীহাটে সভা করতে গেলে ডা: ছালেক চৌধুরীর নির্দেশে এবং ইমরান হোসেনের নেতৃত্বে আমাদের উপর আকস্মিক আক্রমন করে। এতে আমাদের ৬/৮জন সদস্য গুরুতর আহত হয়। তাদের সাথে সাথে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন গতকাল সোমবার দুপুরে বাহাদুরপুর ইউপি সদস্য ওয়াহেদ আলী রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
নিয়ামতপুর থানার ওসি শামসুল আলম শাহ বলেন, গত রবিবার বিকালে উপজেলার খড়িবাড়ী হাটে বিএনপি দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। গতকাল সোমবার ওয়াহেদ আলী নামে বাহাদুরপুর ইউপির সদস্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। অফিসিয়ালি কোন তথ্য প্রমান পাইনি। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবে গত রোববার উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছাদরুল আমীন চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় এই বলে খড়িবাড়ীতে আহবায়ক কমিটি করতে গেলে মোস্তাফিজুর রহমানের গ্রুপের লোকজন আমাদের উপর আক্রমন করে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন