রাজাপুরে চিকিৎসকের অভাবে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলাবাসী

রাজাপুরে চিকিৎসকের অভাবে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলাবাসী

রিপোর্ট : ইমাম বিমান
ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক সহ লোকবলের অভাবে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে।  রাজাপুর উপজেলার ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে এখানে চিকিৎসা নিতে আশা  রোগীরা তাদের চাহিদা মতো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা। 

একদিকে বর্তমান সরকার যখন চিকিৎসা সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে বদ্ধ পরিকর অপরদিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে জোড়া তালির দিয়ে চলার মতোই চলছে রাজাপুরের  এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল যেখানে ১৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সেখানে বর্তমানে চিকৎসক সংখ্যা মাত্র ২ জন। একদিকে যেমন ১৩ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় যখন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিপায় তখন কর্মরত ঐ দুজন চিকিৎসককে পড়তে হয় বিপাকে অপরদিকে প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা অধিকাংশ সময় ডাক তার বিহীন এ হাসপাতালে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না পেয়েই তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। তাই এই উপজেলার বাসিন্দারা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ বিষয় হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাস্তবে সেবাদানের ক্ষেত্রে কোন প্রকার উন্নতি ঘটেনি। এখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হলেও কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ কারনে অপারেশন থিয়াটারে স্থাপিত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি থাকলেও তা ক্রমেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন এখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে রোগীরা এসে চিকিৎসক না পেয়ে অধিক ব্যয়ে জেলা সদর হাসপাতালে চলে যান। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের প্রসবের সময় জরুরী ভাবে সিজারিয়ান(সিজার) করা জরুরি হয়ে পড়লেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। উপজেলা কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী),জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথিসিয়া), ডেন্টাল সার্জন, সহকারী সার্জনসহ অনেক চিকিৎসকের পদ র্দীঘদিন ধরে শূন্য আছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে খাদ্য বরাদ্ধ পাওয়া গেলেও চাহিদা মোতাবেক ঔষধপত্রসহ চিকিৎসক ও জনবল পোষ্টিং দেয়া হয়নি। এখানে বহু বছর ধরে এক্স-রে মেশিন থাকলেও মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট(রেডিও) অভাবে ব্যবহার হচ্ছেনা। হাসপাতালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও প্রয়োজনীয় জনবল, এনেসথিসিয়া ও সার্জারি ডাক্তার না থাকায় সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এখানে দাতেঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই।

এ বিষয় চিকিৎসেবা বঞ্চিত কয়েকজন অভিযোগকারী জানান, রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরির্বতে হাসপাতালের পিয়ন আর ওয়ার্ড বয়রা বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা সেবা দেয়। ডাক্তার না থাকায় ব্যান্ডেজ, সেলাইসহ ছোটখাটো বিভন্নি অস্ত্রোপাচার পিয়ন ও  ওয়ার্ড বয়রাই করে থাকেন। এ হাসপাতালে প্রায় সময় ইনডোরে ৬০/৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং আউটডোরে ১৫০/২০০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। বিশেষ করে গাইনি কোন ডাক্তার না থাকায় মহিলা রোগীদের চরম দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে শুধু তাই নয় এ হাসপাতালে কোন ব্লাড ব্যাংক না থাকায় জরুরী কোন রোগীর রক্তের প্রয়োজন হলে তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে ২জন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে লিখিত ও মৌখিক ভাবে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget