পিরোজপুর স্বরুপকাঠিতে নদী গর্ভে বিলীনের পথে কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন

পিরোজপুর স্বরুপকাঠিতে নদী গর্ভে বিলীনের পথে কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন

রিপোর্ট : ইমাম বিমান: পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলাধীন কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে।

স্বরুপকাঠি উপজেলার ঘেষে বয়ে যাওয়া সন্ধ্যা নদীর তীরর্বতী শান্তিহার এলাকায় কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি থাকায় নদী ভাঙ্গনের কবলে নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হওয়ার পথে বিদ্যালয় ভবন। সন্ধা নদীর করালগ্রাসে ইতোমধ্যে একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হলেও বাকী অংশ যেন যাওয়ার অপেক্ষায় পরে আছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টির ৬২ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ৫৯ শতাংশই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

নদীর পাড়ে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিলে আস্তে আস্তে পর্যায়ক্রমে তা বিদ্যালয়ের দিকে আসতে থাকলে গত ৩ আগষ্ট শনিবার বিদ্যালয় ভবন সহ একটি কক্ষের নিচ থেকে মাটি ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভবনটির বিভিন্ন ফাটল দেখা দিলে শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হলে বিদ্যালয় ভবনের বাকী দুইটি কক্ষে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। 

৫ জুলাই সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ভবনের মধ্যে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীর ৯ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিচ্ছেন শিক্ষকরা।
যে কোনো সময় বিদ্যালয়ের পুরো ভবনটি নদীতে ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন এলাকার লোকজন।বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে চারজন শিক্ষক সহ মাত্র ২৪ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। 

এ বিষয় শান্তিহার কুনিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক মো.মাসুম জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপরে ১৯৯৮ সালে সরকার একটি পাকা একতলা ভবন নির্মান করে দেন। তিনি বলেন এক সময় বিদ্যালয়টিতে শতাধিক শিক্ষার্থী লেখা পড়া করলেও নদী ভাঙ্গনের কারনে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের সন্তানদের বেশীর ভাগ অন্যত্র নিয়ে লেখাপড়া করাচ্ছেন। সে কারনে বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ২৪ জন। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রায় ৮২ভাগ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় শিক্ষর্থীর সংকটও রয়েছে। 

এ বিষয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দিলদার নাহারের কাছে ভাঙন কবলিত বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের বিষয় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির ভবনের একাংশ ভেঙ্গে যাওয়ার কথা শুনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে তার শিক্ষার্থীদের নিয়ে পার্শ্বের বিদ্যালয়ে যুক্ত হতে বলা হয়েছে। যেহেতু জমি সংগ্রহ করাসহ ভবন স্থানান্তর করতে একটু সময়ের প্রয়োজন।

এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার আবদুল্লাহ আল মামুন বাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি ভাঙ্গন কবলিত বিদ্যালয়টি সম্পর্কে আজ শুনেছি  এবং আমি বিকেলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। তিনি আরো বলেন, গত ২০ এপ্রিল পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) মো. জাহিদ ফারুক স্বরূপকাঠির সন্ধ্যা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ভাঙ্গন কবলিত রক্ষা করতে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পিরোজপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ম্যাপ করে নিয়ে যান। 

নদী ভাঙ্গন রোধের বিষয় কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে পিরোজপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদ আহম্মেদের মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় পরবর্তিতে একই দফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহ আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডিজাইন করে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে প্রাক্কলন তৈরি করে টেন্ডার করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget