নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: ‘দক্ষতা নিজের সম্পদ, দক্ষ জনশক্তি দেশের সম্পদ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গত চার বছর আগে নওগাঁয় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) চালু করা হয়। এটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষক ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন শীর্ষক একটি প্রকল্প। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তার বেহাল দশা। মাত্র ২শ মিটার রাস্তার কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে আসা-যাওয়া করতে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। এদিকে সামান্য এই রাস্তাটি নিয়ে ঠেলাঠেলি শুরু করেছেন গণপূর্ত বিভাগ ও পৌরসভা।
নওগাঁ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালে নওগাঁ শহরের বাঁঙ্গাবাড়ীয়া মহল্লার থানার পেছনে দুই একর জায়গার উপর প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মরহুম আব্দুল জলিল ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। ২০১৬ সালের প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়। কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল মেশিন, ইলেকট্রিক্যাল হাউজ ওয়ারিং এবং অটোমেকানিক্সসহ পাঁচটি বিষয়ে ২শ জন প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
শহরের প্রধান রাস্তা থেকে দক্ষিণ দিকে থানার পেছন দিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে টিটিসিতে যাওয়ার একটি মাত্র সড়ক। টিটিসিতে যাওয়ার প্রধান ওই রাস্তাটি বাঁঙ্গাবাড়ীয়ার শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে চকমুক্তার মহল্লার ভিতর দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি ঘুরে বরেন্দ্র বহুমূর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সামনে বকুলতলীর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়েছে। এ রাস্তাটিও দীর্ঘ দিন থেকে সংস্কার না হওয়া খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রধান রাস্তা থেকে থানার পেছন দিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ থেকে পূর্বদিকে রাস্তাটি যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখান থেকে মাত্র ২শ মিটার দূরে টিটিসির ওই রাস্তাটির বেহাল অবস্থা।
যেখানে বর্ষা মৌসুমে টিটিসির প্রধান ফটকের সামনে পানি জমে ছোটখাটো ডোবায় পরিনত হয়। প্রতিদিন টিটিসিতে প্রায় আড়াই থেকে তিনশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হয়। এতে এক অস্বস্থিকর পরিবেশ তৈরী হয়। সামান্য এই রাস্তাটি সংস্কার নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ ও পৌরসভা ঠেলাঠেলি শুরু করেছেন ।
স্থানীয় ও শিক্ষার্থীরা বলেন, টিটিসি একটি গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান। ওই রাস্তাটি টিটিসি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রায় ২০টি পরিবারের মানুষ আসা-যাওয়া করতে হয়। রাস্তাটির কারণে দীর্ঘদিন থেকে বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তীতে পড়তে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী টিটিসিতে যেতে চাইত না। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতনরা।
নওগাঁ পৌরসভা মেয়র নজমুল হক সনি বলেন, থানার মোড় থেকে বকুলতলা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার একটা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে টিটিসি’র রাস্তাটি নাই। টিটিসি যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান এটা গণপূর্ত করে দেয়ার কথা। তারপরও পরবর্তীতে যদি কোন প্রজেক্টের মধ্যে ঢুকানো যায় তাহলে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।
অপরদিকে, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমসান গণি বলেন, যেহেতু ওই এলাকাটি পৌরসভার। গত তিন বছর থেকে মেয়রকে অনুরোধ করা হচ্ছে রাস্তাটি সংস্কারের করে দেয়ার জন্য। কিন্তু কোন ভ্রুক্ষেপ করছেন না। আমরা শুধু প্রতিষ্ঠানের ভিতরের রাস্তাটি করতে পারি এবং করেও দিয়েছে, যা প্রজেক্টে ছিল। এর বাহিরে কোন কিছু করার এখতিয়ার আমাদের নেই।
নওগাঁ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওহিদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে উপরের মহলের বিভিন্ন জনের সাথে কথা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ে পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে। পৌরসভা বলছে বরাদ্দ নাই। এদিকে গণপূর্তর কোন আশ্বাস নাই। এটা নিয়ে বহুত চিঠি চালাচালি হয়েছে। সবাই আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন