নওগাঁর যুবক চট্টগ্রামে
নওগাঁ প্রতিনিধি: বিয়ে হয়েছে কিছুদিন হলো। বিয়ের সময় হাতে লাগানো মেহেদীর রং এখনো শুকায়নি। কিন্তু তার আগেই এক সড়ক দূর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন আল মামুন হোসাইন (২৭) নামে এক যুবক। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়কের ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে সড়ক দূর্ঘটনায় তিনি মারা যান। তিনি চট্টগ্রামে ঔষধ কোম্পানি ‘স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে’ এমপিও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের বিন্দারামপুর গ্রামে। বাবার নাম আফজাল হোসেন ভাদু।
জানা গেছে, রমজানের কয়েকদিন আগে পাশের গ্রামের রামচন্দ্রপুরের মেয়ে সুরমিকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন আল মামুন হোসাইন। এরপর ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়িতে আসেন। গত ৮ জুন শনিবার বউ ভাত অনুষ্ঠিত হয়। ছুটি শেষে আল মামুন গত ৯জুন কর্মস্থল চট্টগ্রামে মা ও বউকে সঙ্গে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি চট্টগ্রামের মানিকছড়ি থেকে ফটিকছড়ি সদরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে একটি সিএনজির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে আল মামুন গুরুত্বর আহত হন। এসময় তাকে গুরুত্বর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। ঘটনার পর আল মামুন এর সহকর্মীরা (কলিগ) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ আপলোড করেন। এরপর বিষয়টি জানার পর আল মামুনের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
আরো জানা যায়, আল মামুনরা তিন ভাই-বোন। তিনি সবার ছেটে। নিন্মবৃত্ত পরিবার। বাবার একটি ছোট মুদি দোকান আছে। অভাবি সংসারে কষ্ট করে পড়াশুনা করেছেন আল মামুন। প্রায় দেড় বছর হলো ঔষধ কোম্পানিতে যোগদান করেছেন। সংসারে সুখের ছায়া এখনো আসেনি। কিন্তু তার আগেই একটি দূর্ঘটনায় স্বপ্ন সব কেড়ে নিল। নববধুকে রেখেই না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো।
আল মামুনের এক কলিগ শাহিন উদ্দিন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘দেখা হবে না আর, কথা হবে না আর। সড়ক দূর্ঘটনায় কেড়ে নিল। প্রিয় মামুন ভাইকে। আল্লাহ প্রিয় ভাইকে জান্নাত দান করুন। আমিন।’
আরেক সহকর্মী ফরকানুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেকে কিভাবে সান্তনা দিব বুঝতেছি না...। এত চেষ্টার পরও আপনাকে বাঁচাতে পারলাম না। আল্লাহ আপনাকে পরপারে ভাল রাখুক। আমিন।’
আরেক সহকর্মী ফরকানুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেকে কিভাবে সান্তনা দিব বুঝতেছি না...। এত চেষ্টার পরও আপনাকে বাঁচাতে পারলাম না। আল্লাহ আপনাকে পরপারে ভাল রাখুক। আমিন।’
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের পরিবার কোন ধরনের সহযোগীতা চাইলে সহযোগীতা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন