নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার গাংজোয়ার গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর, নগদ অর্থ লুটপাট ও এক গৃহবধু শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার নওগাঁ সদর থানায় শ্লীলতাহানির শিকার মাহফুজা আক্তার নামে ওই নারী বাদী হয়ে গাংজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গাংজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ের পুরনো ভবন ভাঙ্গার কাজ করেন গাংজোয়ার গ্রামের বাসিন্দা ফায়সাল, মোশাবর ও মিল্টন সহ কয়েকজন শ্রমিক। ভবনটি ভাঙ্গার কাজ শেষ হলে শ্রমিকেরা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের কাছে চুক্তি অনুযায়ী কাজের মজুরি চাইতে যান। কিন্তু সিদ্দিকুর তাঁদেরকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বিষয়টি নিয়ে তখন শ্রমিকদের সঙ্গে সিদ্দিকুর রহমানের কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জেরে গত শুক্রবার ওই গ্রামের বাসিন্দা আরেফিন ইসলাম পিন্টু শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে সিদ্দিকুর রহমানের কাছে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। শ্রমিকদের অতিদ্রুত ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবি জানান। বিষয়টি তাঁর সঙ্গে সভাপতি সিদ্দিকুরের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন রাতে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুরের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক সন্ত্রাসী কায়দায় আরেফিন ইসলাম পিন্টুর বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁরা বাড়ির জানালা-দরজা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়া ড্রয়ারে রাখা সাড়ে ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পিন্টু বাবা মারধর করেন এবং পিন্টুর স্ত্রী মাহফুজা আক্তারকে মারপিট ও তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের সময় পিন্টু বাড়িতে ছিলেন না। এ ঘটনায় মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে পর দিন শনিবার নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেন।
আরেফিন ইসলাম পিন্টু বলেন, শ্রমিকদের পাওনা না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় স্কুলের সভাপতি ও তাঁর লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং আমার স্ত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। হামলার সময় বাড়ি থেকে একটু দূরেই বাজারে ছিলাম। হামলাকারীদের দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত দেখে আমি ওই সময় প্রাণভয়ে বাড়িতে না এসে দূর থেকে সবকিছু দেখি। পরে তাঁরা চলে গেলে আমি বাড়ি যাই।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে গাংজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে নওগাঁর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন