নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় দই খেয়ে বিষক্রিয়ায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দইয়ের মধ্যে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে বিষক্রিয়ায় নিহত অর্জুন সরকারের ছোট ভাই অসীমের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে অসীম পলাতক রয়েছেন। নিহতরা হলেন- অর্জুন সরকার, তার স্ত্রী তিথী রানী এবং তাদের আড়াই বছরের মেয়ে অনন্যা সরকার। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের জোতহরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও শনিবার ভোরে তারা মারা যান। অভিযুক্ত অসীম কুমার ওই গ্রামের অজিত কুমারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অসীম কুমার বাজার থেকে দই কিনে এনে বড় ভাইকে খেতে দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে দই খাওয়ার পর অর্জুন সরকার, তার স্ত্রী ও মেয়ে বমি করা শুরু করে। ক্রমেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে প্রথমে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় অর্জুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং স্ত্রী তিথি রানী ও শিশু সন্তান অনন্যাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টার দিকে অর্জুন এবং ভোরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে তার স্ত্রী ও মেয়ে মারা যান।
অর্জুনের শাশুরি যমুনা রাণী অভিযোগ করে বলেন, অর্জুনের সঙ্গে তার ছোট ভাই অসীমের বহুদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে শুক্রবার রাতে অর্জুনের অজান্তে অসীম তাদের দইয়ের মধ্যে ‘গ্যাস বড়ি’ মিশিয়ে খাওয়ায়। দই খাওয়ার পর রাতেই আমার মেয়ে (তিথী) আমাকে ফোন করে জানায়- তাদের সবার পেট ব্যথা করছে। আমি তখন জানতে পারি- তাদের এই দই খাইয়েছেন অসীম।
মহাদেবপুর থানা ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রাতে দই খাওয়ার পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় অর্জুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং স্ত্রী তিথি রানী ও মেয়ে অনন্যাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, রোগীদের শরীরে কীটনাশকের (বিষের ট্যাবলেট) জীবানু পাওয়া গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া তাদের রামেক ও নওগাঁ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন