আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ: বর্তমানে দেশের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে প্রধান ফসল ইরি-বোরো ধান। মাঠে কৃষকের কষ্টের স্বপ্নগুলো সোনালী রং ধারন করা শুরু করেছে। ধানের বীজ আর আবহাওয়ার কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ধানের মাঠে বিক্ষিপ্ত আকারে দেখা দিয়েছে ধানের মরণ ব্যাধী ব্লাস্ট রোগ, বাদামী ঘাস ফড়িং ও মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন রোগের আক্রমণ।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধানের ব্লাস্ট রোগসহ নানা রকমের রোগ-বালাই থেকে ইরি-বোরো ধানকে রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে জেনে তা জমিতে প্রয়োগ করে ধানক্ষেতকে রক্ষা করার জন্য সচেততনতা মূলক লিফলেট বিতরন করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বর্তমান সময়টি ইরি-বোরো ধান ও কৃষকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ধানসহ সকল চাষকৃত ফসলের রোগ সম্পর্কে কৃষকদের প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরামর্শ ও উপায় প্রদান করছে কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তাই নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় কৃষকের পাশে সব সময় কৃষি অফিস আছে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়নের রাতোয়াল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেনসহ অনেকেই বলেন, আমাদের প্রধান ফসল হচ্ছে ইরি-বোরো ধান। চলতি ইরি-বোরো ধানের ক্ষতিকর রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও করনীয় বিষয়ে লিফলেট প্রদান করাসহ নানা বিষয়ে খোজ খবর নিচ্ছে কৃষি কর্মকর্তারা। ধানের কোন রোগ দেখা দিলে আমরা আগের মতো বালাইনাশকের দোকানে যায় না আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি অফিসের কাছে গিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করি। এতে করে আমরা রোগের ব্যাপকতা ছড়িয়ে পড়ার আগেই বালাইনাশক প্রয়োগ করি। এতে করে আমরা অনেক লাভবান হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন বৈরি আবহাওয়া ও বীজের সমস্যার কারণে উপজেলার কোথাও কোথাও ধানের মাঠে বিক্ষিপ্ত ভাবে খুব সামান্য পরিমাণ জমিতে ব্লাস্ট রোগ ও বাদামী ঘাস ফড়িং পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই সব কৃষকদের পরামর্শ প্রদান পূর্বক বালাইনাশক প্রয়োগ করার কারণে ইরি-বোরো ধান বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখন আর ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোন ভয় নেই। আমরা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করা এবং কৃষকদের ধানের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ ও উপায় সম্পর্কে অবগত করছি। এছাড়াও আমরা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ধান ক্ষেতে পরিবেশ বান্ধব আলোক ফাঁদ স্থাপন, কৃষকদের হাতে ধানের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ ও করনীয় সম্পর্কিত লিফলেট প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আমরা কোন ভাবেই কৃষকের কষ্টের স্বপ্ন ধানকে ঘরে তোলা পর্যন্ত কোন ক্ষতি হতে দেবো না যদি আবহাওয়া ধানের অনুক’লে থাকে। যদিও আমাদের জনবল সংকট তবুও উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় কৃষকদের যে কোন বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন