মাহমুদুন নবী বলোল, নওগাঁ: পুনরায় জয়পুরহাট সুগারমিলের বিষাক্ত গাদের প্রভাবে নওগাঁ’র ছোট যমুনা নদীর পানি মারাত্মক দুষনের শিকার হয়েছে। ফলে নদীর মাছ এবং জলজ প্রাণীর মারাত্মক মড়ক দেখা দিয়েছে। এতে বিশেষ করে মৎস্য সম্পদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। পানি হঠাৎ করে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে পানি দুষনের ফলে পরিবেশ হুমকীর মুখে পড়েছে। গত দুইদনি ধরে হঠাৎ করে নওগাঁ’র ছোট যমুনা নদীর পানিতে দুষন দেখা দেয়। দুষিত গাদ নদীর উজান থেকে যতই ভাটার দিকে নেমে যেতে থাকে মাছের মড়কও তেমনই নদীর উজান থেকে ধীরে ধীরে তা ভাটার দিকে নেমে যেতে থাকে। এর দুষনের প্রভাবে প্রথমে মাছ অসুস্থ্য হয়ে ভেসে উঠে এবং পরবর্তীতে মারা যেতে থাকে। নদীর দু’ধারের শত শত মানুষকে এসব অসুস্থ্য ও মৃত মাছ ধরতে দেখা গেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নওগাঁ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর দুই পার্শ্বের শত শত নারী পুরুষ, তরুন তরুনীকে জাল দিয়ে এবং বিভিন্নভাবে ছেঁকে মাছ ধরতে থাকেন। রাতের বেলা মশালের আলো, হারিকেনের আলো এমন কি মোবাইলের আলো দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত মাছ ধরতে দেখা গেছে। এ যেন মাছ ধরার উৎসবে পরিনত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেছেন ইতিমধ্যে জয়পুরহাট চিনিকল কর্ত্তপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। তবে তারা সম্পূর্নভাবে সুগারমিলের গাদ ফেলার কথা অস্বীকার করেছেন। জেলা প্রশাসক নওগাঁ জেলা মৎস্য বিভাগকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পানি দুষনের মুল কারন উদঘাটনপূর্বক রিপোর্ট দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে প্রতি বছর জয়পুরহাট সুগারমিলের দুষিত গাদের প্রভাবে নওগাঁ ছোট যমুনা নদীর পানি দুষনের ফলে বেধড়ক মাছের মড়ক দেখা দিত এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হতো যা ফসল উৎপাদনসহ প্রাত্যহিক গৃহস্থালি কাজের মারাত্মক ব্যঘাত ঘটতো। সে সময় স্থানীয় একুশে পরিষদসহ পরিবেশ নিয়ে যেসব সংগঠন কাজ করে তারা একযোগে মানববন্ধন, প্রতিবাদসভাসহ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলে। এর ফলে গত ৩/৪ বছর বিষাক্ত গাদ ফেলা বন্ধ থাকায় এই দুষন বন্ধ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এ বছর পানি দুষনের ঘটনা পুনরায় নওগাঁবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
এ ব্যপারে জয়পুরহাট সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম জিয়াউল ফারুক বিষয়টি সম্পূর্ন অস্বীকার করে বলেছেন গত ৮ ফেব্রুয়ারী থেকে মিল বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া মিলে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে বিষাক্ত গাদ নওগাঁ’র ছোট যমুনা নদীতে যাওয়ার কোন কারন নেই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন