আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ: নওগাঁয় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রম। এক সময় এই জনপদের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ মানে সোনার হরিণ হিসেবে গণ্য হতো। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে প্রত্যন্ত গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে ভ্যানে ফেরি করে বিদ্যুৎ পৌছে দিচ্ছে আলোর ফেরিওয়ালারা। এই আলোর ফেরিওয়ালাদের কাছে আবেদন করার ৫-১০ মিনিটের মধ্যে মিটার সংযোগ দিয়ে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্রে জানা “শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ দুয়ার মিটারিং কার্যক্রম আলোর ফেরিওয়ালারা। বর্তমান সরকারের অঙ্গিকার ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া হবে। গ্রাম থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোন মানুষকে যেন আর অন্ধকারে থাকতে না হয় সেই লক্ষ বাস্তবায়ন করার জন্য দেশব্যাপী শুরু হয়েছে এই আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের আওতায় নওগাঁ জেলার ৪টি জোনাল অফিস থেকে ফেরি করে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ বিহীন ঘরের মানুষের কাছে। এখন আর কাউকে দালালদের মাধ্যমে এসে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এই ফেরিওয়ালাদের কাছে এসে জামানত ও মিটারের খরচ দিলেই মুহুর্তের মধ্যে বাড়িতে পৌছে যাচ্ছে বিজলীর আলো বিদ্যুৎ। এতে করে অর্থের অপচয় ও দালালের হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা।
উপজেলার খাঁনপুকুর বাজারের চা বিক্রেতা মোছা. রহিমা বেগম বলেন, আমার এই চায়ের দোকানে আগে টাকার অভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারিনি। যার কারণে রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে চা বিক্রি করতাম। আর বিদ্যুৎ না থাকলে সন্ধ্যার পর তেমন কাস্টমাররা আসতো না। আমি আলোর ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বিদ্যুৎ নিয়েছি। এরপর থেকে এখন অনেক টাকার চা বিক্রয় হয়। আমি আলোর ফেরিওয়ালার মাধ্যমে বিদ্যুৎ পেয়ে অনেক উপকৃত হয়েছি।
করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন কিছুদিন আগেও গ্রামের মানুষরা একটি বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য দালালদের হাতে হাজার হাজার টাকা তুলে দিয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ভ্যানে ফেরি করে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার এই কার্যক্রমের জন্য আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ এখন আর মানুষকে দালাল কিংবা অফিসে গিয়ে হয়রানী হতে হচ্ছে না। নিমিষের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। এতে করে আমরা অনেক উপকৃত হচ্ছি।
নওগাঁ পবিস-১ রাণীনগর জোনাল অফিসের এজিএম (ও এন্ড এম) সাইদী সবুজ খাঁন বলেন চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে আমাদের এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান গাড়ি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা প্রায় ৪শত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করেছি। সরকারের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন