নওগাঁয় অপারেশনের টেবিলে রোগীর মৃত্যু: ৫ লাখ টাকায় সমঝোতা

নওগাঁয় অপারেশনের টেবিলে রোগীর মৃত্যু: ৫ লাখ টাকায় সমঝোতা
আতাউর শাহ্, নওগাঁ : নওগাঁ শহরের বেসরকারি ক্লিনিক ‘হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে’ অপারেশনের সময় হাফিজুর রহমান (৩২) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর রোগীর আত্মীস্বজন ক্লিনিক ঘেরাও করলে উত্তেজিত হয়ে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। অনেক দেনদরবারের পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে সমঝোতা করে।

গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শহরের কাজীর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজুর রহমান সদর উপজেলার ফতেরপুর ইউনিয়নের আদম দূর্গাপুর গ্রামের মৃত হাসেম আলির ছেলে।

জানা গেছে, হাফিজুর রহমান পিত্তথলির অপারশেনের জন্য মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ‘হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে’ ভর্তি হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর রাত ৭ টা ১৫ মিনিটে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। এ সময় অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. ইসকেন্দার হোসেন, সার্জন ডা. আব্দুস সোবহান ও কার্ডিওলজিস্ট রোগীর অপারেশন করেন এবং ডা. এমআর চৌধূরী উপস্থিত ছিলেন। অপারেশন শেষে ৭ টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত রোগীর কোন জ্ঞান না ফেরায় অপারেশন টেবিলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নিহতের পরিবারের সদস্যরা ক্লিনিক ঘেরাও করলে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গভীর রাত পর্যন্ত দেনদরবারের পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের দুই শিশু সন্তান রিয়াদ ও জিহাদের নামে ৫ লাখ টাকা দেয়ার শর্তে সমঝোতা হয়।

নিহতের ছোট ভাই রাহেল বলেন, আমার ভাইয়ের কোন হার্ডের সমস্যা ছিল না। অপারেশনের আগে সবকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলাম। অপারেশনের জন্য সার্জনের সাথে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা এবং ক্লিনিকে ৫ হাজার ৫শ’ টাকা চুক্তি করেছিলাম। এছাড়া নিজস্বভাবে ঔষধ কেনার কথা ছিল। কিন্তু অপারেশনে কোন ভুলের কারণে ভাই মারা গেছে। যদি কোন সমস্যাই থাকতে তাহলে আগে বললে অপারেশন করাতাম না। ভাইয়ের দুই ছেলের নামে ক্লিনিক মালিক ৫ লাখ টাকার চেক ইস্যু করেছেন।

ক্লিনিক পরিচালক নাজমুল হুদা জুয়েল বলেন, কোন ভুল অপারেশন হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। অপারেশন শেষে রোগীর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। অপারেশন টেবিলে রোগী হৃদ যন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ (হার্ড স্ট্রোক) হয়ে মারা গেছে। তবে মানবিকতার দিক বিবেচনা করে নিহতের দুই সন্তানের নামে ৫লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক অপারেশনের সময় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ মন্ডল বলেন, উভয় পক্ষ আপোশ হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আপোশের টাকার জন্য ১৫ দিন সময় নিয়েছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget