নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে ধানের দাম কমলেও চালের দাম বাড়ছে

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাটের বরেন্দ্র অঞ্চলে ধানের দাম কমলেও চালের দাম বেড়েই চলছে। দেশের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁ জেলা। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মেটানোর পর হাজার হাজার মে.টন চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। চালের দেশে এখন চালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় নি¤œ আয়ের মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার ধামইরহাট উপজেলায় এবার ১৯ হাজার ৭শত ৯০ হেক্টর জমিতে কৃষকগণ আমন ধান চাষাবাদ করে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার ধানের ফলনও সন্তোষ জনক। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় কীটনাশকের ব্যবহার কম হলেও ধান ঘরে তোলার শেষ মূর্হুতে খড়ার কারণে কৃষকদেরকে জমিতে বাড়তি সেচ দিতে হয়। এতে খরচের হিসাব বৃদ্ধি পায়। অধিকাংশ জমিতে ব্রিধান-৪৭,৪৯,৬২, বিনা-৭,স্বর্ণা-৫, ত্বরা স্বর্ণ জাতের ধান রোপন করা হয়। অগ্রহায়ণ মাসে ধান কর্তন শেষ হয়। উপজেলার উমার ইউনিয়নের বিহারীনগর গ্রামের কৃষক মো. উজির উদ্দিন বলেন, তার জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান কর্তন করা হয়েছে। একর প্রতি প্রায় ৭৫-৭৮ মণ হারে ফলন হয়েছে। ধানতাড়া গ্রামের কৃষক মো. হাসান আলী বলেন, তাদের এলাকায় অধিকাংশ জমিতে স্বর্ণা-৫ ধান রোপন করা হয়েছে। একর প্রতি প্রায় ৮০ মণহারে ফলন হয়েছে। ধানতাড়া গ্রামের কৃষক আবুল হাসান বলেন, ধানী গোল্ড ধান একর প্রতি ৮৫ মণ এবং স্বর্ণা-৫ জাতের ধান একর প্রতি ৮০ মণহাওে ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে ধামইরহাটের সর্বত্র আমন ধান কেনা বেচা শুরু হয়েছে ধামইরহাট পৌরসভার অন্তর্গত হাটনগর গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ফসল তোলার শুরুতে ধানের মণ (৪০ কেজি) ছিল ৬শত ৩০ থেকে ৬শত ৫০ টাকা। মাঝে ১ সপ্তাহের জন্য ধানের মণ ৮শত টাকা ওঠেছিল। কিন্তু গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে এখন স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ৭শত ৩০ থেকে ৭শত ৫০ টাকা কেনা বেচা চলছে। তিনি আরও বলেন, ফসল উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকগণ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে না। এদিকে বাজারে ধানের দাম কম হলেও চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে চালের ভরা মওসুমে প্রতি কেজি প্রকারভেদে মিনিকেট ৪৫-৪৭ টাকা, জিরাশাইল (সরু চাল) ৪০-৪২টাকা, স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৩২-৩৪ টাকা দরে কেনা বেচা চলছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ার নি¤œ আয়ের মানুষ বিশেষ করে ভ্যান, রিক্সা, দিনমজুর শ্রেণীর মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে। উপজেলার মঙ্গলকোঠা গ্রামের ভ্যান চালক মো. আতোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আয় না বাড়লেও চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, কৃষকরা ধানের যাতে নায্য মূল্য পায় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বর্তমানে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কৃষকরা লাভবান হয়নি বরং মিল মালিকরা লাভবান হচ্ছে। আগামীতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কৃষকরা ধান বিক্রি না করে মজুদ রাখার জন্য তিনি কৃষকদের পরামর্শ দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget