অর্থাভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না: পা হারানোর আশংকা এরশাদের

আতাউর শাহ্, নওগাঁ: নওগাঁর রাণীনগরে সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত মো: এরশাদ আলী প্রাং (৩৭) অর্থাভাবে চিকিৎসা নিতে না পারায় ধীরে ধীরে নেমে আসছে তার জীবনে অন্ধকারের ছাপ। অভাব-অনটনের সংসারে দু’মুঠো ডাল ভাতের আশায় যখন কারো কাছে হাত না বারিয়ে নিজে চার্জার ভ্যান চালিয়ে যতটুকু উপার্জন হতো তা দিয়েই চলতো এরশাদের সংসার। হঠাৎ করে সড়ক দূর্ঘটনায় ডান পায়ে আঘাত পেয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সেখানে যথারীতি চিকিৎসা চললেও সরকারি ঔষুধের পাশাপাশি বাহির থেকে যে সমস্ত ঔষুধ কেনার জন্য চিকিৎসকরা  বলেছিল সেই ঔষুধ কেনার মত টাকা না থাকায় বিনা চিকিৎসায় এখন নিজ বাড়িতে বসে ছটফট করছে। স্থানীয় কিছু হৃদয়বান ব্যক্তি আর্থিক কিছু সহযোগিতায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে সপ্তাহ খানেক চিকিৎসাধীন থাকার পর সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। সব মিলে অর্থ সংকটের কারণে উপযুক্ত চিকিৎসা করতে না পারায় ধীরে ধীরে নেমে আসছে এরশাদের জীবনে অন্ধকারের ছাপ। চিকিৎসকরা বলছে, ভাল চিকিৎসা করতে না পারলে ইনফেকশনের কারণে তার পা হারানো সহ প্রাণনাশেরও আশংকা রয়েছে।
সরেজমিন তার বাড়িতে গিয়ে এরশাদ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম’র সাথে কথা বলে জানা যায়, নওগাঁর রাণীনগর সদরের সিম্বা গ্রামের  মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে গরীব অসহায় হতদ্ররিদ্র ভ্যান চালক এরশাদ আলী প্রাং তার ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার ব্যয় যোগান দিতে একটু উপার্জন বাড়াতে ভ্যান ছেড়ে অটো চার্জার (টমটম) চলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাজনের সাথে কথা বলে অটো চার্জার নিয়ে ভাড়ায় চালাতে শুরু করে। এরশাদ আলী তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে কে নিয়ে কোন রকম জীবন চলছিল। পাশাপাশি বড় মেয়ে সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া-লেখা করতো।
মেয়েটি এবার জে এস সি পরীক্ষায় ৩.২০ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে। ছেলে দু’টি ছোট তাই স্কুলে এখনও ভর্তি করায়নি। এরই মধ্যে গত ১২ নভেম্বর ১৮ইং সন্ধ্যায় উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের অটো চার্জারের মহাজন সবুজ হোসেন রাণীনগর রেলগেট থেকে এরশাদ আলীকে তার মটরসাইকেলে তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথি মধ্যে আল-আমীন দাখিল মাদ্রাসা’র মোড়ে বিপরীত দিক থেকে আসা ভটভটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে এরশাদ মারাত্মক ভাবে আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাণীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সেখানে অর্থো-সার্জারী বিভাগের (সহকারি রেজিষ্ট্রার) চিকিৎসক ডা: মো: এনামুল হক’র মাধ্যম জানা যায়, তার ডান পায়ের হাঁটুর মালি ভেঙ্গে তিন টুকরো হয়ে গেছে। প্রায় ২০ দিন পর অপারেশন করার কয়েক দিনের মধ্যেই তার পায়ে ইনফেকশন দেখা দেয়। তার মধ্যে আবার আগে থেকেই তার ছিল ডায়েবেটিক। সব মিলিয়ে অভাব অনাটনের সংসারে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সড়ক দূর্ঘটনা! আহত এরশাদ আলী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সমাজের স্বহৃদয়বানদের কাছে নিম্মের এই ঠিকানায় আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget