মাহমুদুন নবী বেলাল, নওগাঁ : রোগীদের ভরসার আশ্রয়স্থল নওগাঁ সদর হাসপাতাল। সেবার মান আগের তুলনায় ভাল হওয়ায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। চোখে পড়ছে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়, নামমূল্যে পাঁচ টাকার টিকিটে অভিজ্ঞ/বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ভাল সেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন গরীব ও অসহায় রোগীরা। ফলে দিন দিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। তবে চিকিৎসক সংকটে কিছুটা বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের বাড়তি চাপ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটি পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে আরো ১৫০ শয্যা যোগ হয়ে ২৫০ শয্যায় বিশিষ্টতে উন্নিত হবে। জেলা সদরসহ ১১ টি উপজেলায় প্রায় ৩২ লাখ মানুষের বসবাস। এছাড়া পার্শবর্তী জেলা বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা ও জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা থেকেও রোগীরা সেবা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। ফলে একমাত্র ভরসার স্থল হয়ে উঠেছে এ সদর হাসপাতালটি। মাত্র ৫টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন ১৫০০-১৭০০ রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়া
বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। হাসপাতালে ৪২ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও এর বিপরীতে কর্মরত আছে ৩০ জন। ফলে প্রয়োজনীয় তুলনায় চিকিৎসক স্বল্পতায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে বাড়তি চাপ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সেই সাথে রোগীরাও প্রাপ্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা গেছে, ডা: রওশন আরা খানম, হাসপাতালে তত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের পরিবেশ অনেক পাল্টে গেছে। তার প্রচেস্টায় হাসপাতালের বারান্দার করিডোরে ৭৫ বেড ও সিলিং ফ্যানের ব্যবস্থা, বহি বিভাগে রুগীদের বসার সুব্যবস্থা, হেল্পডেক্স সেবার ব্যবস্থা, আউটডোরে মাইকিংনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থা, ডিজিটাল এনালাইজার, ডিজিটাল এক্সরে মেসিন ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমান (তত্বাবধায়ক) ডা: রওশন আরা খানম, তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্যে অনেক আন্তরিক, তিনি বলেন নওগাঁ আমার নিজের জেলা, এই হাসপাতালে জনগণ যেন সুন্দর পরিবেশে সুষ্ঠ ও সঠিক চিকিৎসা পায় তার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছি এছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য রুগীরা দালালের খপ্পরে পড়ে বাহিরের দ্বীগুন টাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে হতো। সেটাও তিনি নির্মুল করেছেন। এখন হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ব কমে গেছে। রুগীরা আর প্রতারিত হচ্ছেনা। সবকিছুর সেবা এই হাসপাতালে নিয়ে বাসায় ফিরছেন সেবা নিতে আসা জনসাধারন। সোমবার আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার মাস্টারপাড়া থেকে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে এসেছেন সারমিন। বললেন, আউটডোরে টিকিটের জন্য প্রায় এক ঘন্টা ধরে দারিয়ে আছি। এত লম্বা লাইন শেষই হয় না। এদিকে বাচ্চার শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখালে ওকে ওষুধ খাওয়াতে পারতাম। সদর আধুনিক হাসপাতালের (আরএমও) ডাঃ মুনির আলী আকন্দ বলেন, প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ১৫০০-১৭০০ শতাধিক রোগী সেবা নিতে আসে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত, বহির্বিভাগে ১০জন চিকিৎসক রোগী দেখেন ও সেবা পদান করেন। নওগাঁ সদর হাসপাতালের (তত্বাবধায়ক) ডাঃ রওশন আরা খানম বলেন, হাসপাতালে ৪২জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে ৩০জন। পরিচ্ছন্ন কর্মী ৮ জন পদের বিপরীতে আছে ৫ জন। প্রতিদিন হাসপাতালে হাজার হাজার মানুষের আসা-যাওয়া কিছুটা নোংরা হয়ে থাকে। আমরা চেষ্টা করি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে। কিন্তু জনবল কম থাকায় চেষ্টা করেও শতভাগ সফল হয়ে উঠতে পারছিনা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন