মাহবুবুজ্জামান সেতু,নওগাঁ: আসন্ন ঈদুল আযহাকে ঘিরে কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। একদিকে হাপরে আগুনের শিখা অন্যদিকে হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি, হারকাটি। শহর-গ্রাম সবখানেই কামাররা সমান ব্যস্ত পুরোনো দা, ছুরি এবং বঁটিতে শাণ দিতে। আবার মোটর চালিত মেশিনে শান দেয়ার কাজ চলছে পুরানোগুলোর। কেউবা ব্যস্ত নতুন নতুন দা-ছুরি তৈরিতে। তাই দম ফেলার যেন সময় নেই তাদের। সারা বছর অনেকটা অলস সময় পার করা কামাররা ব্যস্ততার ভিড়ে এখন অতিরিক্ত দরদাম করে সময় নষ্ট করতেও আগ্রহী নন। মান্দা এবং মহাদেবপুর উপজেলার বিভিন্ন কামারদের দোকান ঘুরে দেখা যায়, কোরবানিদাতারা কোরবানির পশু কাঁটাছেড়া করার জন্যে পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত সবক’টি দা ছুরি অার বটি শাণ দেয়ার জন্যে নিয়ে আসছে কামারদের কাছে। ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কামারের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই এসব দোকানে আসছেন। মমহাদেবপুর উপজেলার কচুকুড়ি গ্রামের তকিমদ্দিনের ছেলে রেজাউল নামের একজন ক্রেতা জানান, কয়েক দিন আগে একটা চাপাতি এবং বড় চাকু দিয়েছি। তা তৈরি না হওয়ায় ১ঘন্টা বসে থেকে তা তৈরী করে নিলাম। হার্ডওয়্যারের দোকানগুলোতে এবং কামার পট্টিতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। পোড়া কয়লার গন্ধ, হাপরের হাঁসফাঁস আর হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে চকচকে ধারালো দা, চাপাতি, ছুরি, বঁটিসহ নিমিষে মাংস কাটা-কুটার উপকরণ। জেলা সদর ও উপজেলার কামারের তৈরীকরা দা,ছুরি,বটি, হারকাটির (হার্ডওয়্যারের) দোকানগুলোতে কারিগরদের যেমন ব্যস্ততা বেড়েছে তেমনি বেচাবিক্রি করতে গিয়েও গলদগর্ম হয়ে পড়ছেন বিক্রেতারা। মান্দা উপজেলার সতীহাটে গনেশপুর গ্রামের নরেশ কর্মকারের ছেলে নয়ন কর্মকার এবং তার ছেলে প্রদীপ কর্মকারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর যাবৎ নয়ন কর্মকার এই পেশায় নিয়োজিত। তিনি অারো জানান,স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়। সতীহাটে মেশিনে শান দেয়ার কাজে ব্যস্ত কুলিহার গ্রামের মৃত হাফেজের ছেলে অাশরাফুল জানান, বাবার মৃত্যুর পর হতে তিনি দীর্ঘ ১৮বছর যাবৎ বাবার পেশা কাঁচিতে দড়িটানা শান দেয়ার পাশাপাশি বর্তমানে মেশিনে দা,বটি,চাকু,ছুরি, হারকাটিতে শান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতিছেন। সতীহাটের দিলিপ হার্ডওয়্যারের মালিক দিনেন্দ্রনাথ এবং রুস্তম অালী জানান,স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি।#
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন