মাহবুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ : নওগাঁর আশরাফুল নায়ক মান্নাসহ দুইবাংলার (ভারত এবং বাংলাদেশ) চলচিত্র অভিনেতাদের মধ্যে টপটেন হিরোদের অবিকল কন্ঠে অভিনয় করতে পারে। এটা তার একটা বিশেষগুণ। নায়ক হতে চাই; আত্মবিশ্বাস! আর সেই দৃঢ় বিশ্বাসে নওগাঁর আশরাফুল চলচিত্র জগতের প্রয়াত নায়ক মান্নার কণ্ঠ ধারণের মাধ্যমে তার ব্যতিক্রমী প্রতিভা বিকশিত করতে চায়। ২০০১ সালে আশরাফুলের জন্ম জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় খাজুর ইউনিয়নের মর্তুজাপুর গ্রামের দিনমুজুর আমিনুল ইসলামের পরিবারে। পিতার অর্থনৈতিক অসচ্ছ্বলতা এবং সংসারে অভাবের কারণে দুই পুত্রের লেখাপড়া অনিশ্চিত ভেবে ছোট বেলায় তার নানা মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দক্ষিণ মৈনম গ্রামের তাহের আলী শাহ নিয়ে আসেন নিজ বাড়িতে। ছোটবেলা থেকেই তার মেধা মননশীলতা দেখে বাড়ীর পাশে দক্ষিণ মৈনম হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৬সালেরএসএসসি পরীক্ষা দেওয়ায়ে জিপিএ ৫+পায় সে। পরবর্তিতে নওগাঁ সরকারী ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০১৮ সালের এইচ এস সি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সহিত পাশ করে। আশরাফুল জানায়, লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই সে টিভিতে সিনেমার রূপালি পর্দায় চলচিত্র জগতের প্রয়াত নায়ক মান্নার অভিনীত বাংলা ছায়াছবি দেখা এবং তার অবিকল কন্ঠে কথা বলার পাশাপাশি নায়ক হওয়ার অাত্মবিশ্বাস বুকে ধারণ করত। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে দেশীয় চলচিত্রে অভিনয় জগতের প্রয়াত নায়ক মান্নাসহ অসংখ্য নায়ক এবং খলনায়কের হুবহু নকল কন্ঠ ধারণ করে অভিনয় করতে পারে। আর এই প্রতিভাগুলো তার দীর্ঘ দিনের সাধনারই ফসল বলে সে মন্তব্য করে। এছাড়াও সে ভারতীয় চলচিত্রেরও বেশ কিছু অভিনেতার কন্ঠে অভিনয় করতে পারে বলে জানায়। উদাহরনস্বরুপ বাংলা চলচিত্রের প্রয়াত নায়ক মান্না, এক্সট্রা অডিনারী ভিলেন মিশা সওদাগর, ভয়ংকর ভিলেন ডিপজল, এক্সেপশনাল পারফর্মার ওমর সানী, ওয়ান এ্যান্ড অনলী সুপার স্টার অব সাকিব খান, সুপার স্টার কাজী মারুফ খান, ওল্ড ইজ কোল্ড কাজী হায়াত, কমিডি কিং কাবিলা, ডেন্জার ভিলেন মিজু আহম্মেদ, নিউ জেনারেশন হিরো আরেফিন শুভ, এ্যাকশান হিরো অনন্ত জলিল, অলরাউন্ডার হিরো অমিত হাসানসহ আরো অনেকের কন্ঠে। আর ভারতীয় চলচিত্রের অর্থাৎ, অপার বাংলার জনপ্রিয় নায়ক জিৎ, লাভারবয় দেব, এ্যাকশান হিরো মিঠুন চক্রবর্তী, প্রশেনজিৎ, অংকুশ, ভিলেন রনি- দা, আশিশ বিদার্থী। এছাড়াও তিনি চৌধুরী জাফরুল্যা সারাফতের কন্ঠে ধারাভাস্য প্রদান এবং যাত্রাপালায় অভিনীত রাজা-সেনাপতির অভিনয় করতে পারে। প্রিয় ব্যাক্তিত্ব হিসেবে সে তার পিতা মাতাকেই জানে এবং প্রিয় উক্তি হিসেবে সে বলে, “চর্চা মানুষকে বিকশিত করে”। ক্রিকেট খেলা তার খুব পছন্দনীয়, সে মিথ্যা কথা বলা এবং সময় অপচয় করা অপছন্দ করে বলেও জানায়। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় সে জানায়, মান্নার গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে তার প্রিয় নায়কের মাজার জিয়ারত করা এবং তার কন্ঠ ধারণ করে সফল নায়কে নিজেকে পরিনত করে স্বপ্ন সখ পূরণ করা। কেননা, সে স্মৃতিচারণ করে জানায়,নায়ক মান্নার মৃত্যুর খবর শুনে দুই দিন না খেয়ে ছিলো। এতকিছুর পরেও যেন তার জীবনের একটাই স্বপ্ন আমি কি নায়ক হতে পারবো? নায়ক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আশরাফুল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার ধারণ করা কন্ঠে অভিনয় করে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া টাক দিয়ে তার লেখাপড়ার খরচ এবং পোশাক- পরিচ্ছেদ তৈরীতে ব্যায় করে থাকে বলেও জানায়। সে তার স্বপ্ন পূরণে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।#
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন