নওগাঁ (রাণীনগর) প্রতিনিধি: অবশেষে মরণ ফাঁদ নামক নওগাঁর রাণীনগর রেল ষ্টেশনের ফুট ওভার ব্রিজটির উপরের অংশ অপসারন করার কাজ শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে কাজটি শুরু করা হয়েছে। আসন্ন ঈদুল আযহাতে ট্রেনের ছাদে ভ্রমনকারী অতিরিক্ত যাত্রীদের প্রাণনাশক দূর্ঘটনা থেকে বাঁচানোর জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঈদের পর নতুন উচ্চতায় নির্মাণ করা হবে এই ফুটওভার ব্রিজটির উপরের অংশ।
সূত্রে জানা, প্রতি ঈদে ঢাকাসহ অন্য শহর থেকে ছুটিতে বাড়ী ফেরা ট্রেনের ছাদে ভ্রমনকারী যাত্রীদের এই ফুটওভার ব্রীজে ধাক্কা লেগে হতাহতের ঘটনা ঘটতো। প্রতিটি ফুটওভার ব্রীজ প্রায় ১৭ ফুট থেকে সাড়ে ১৭ ফুট উঁচু হয়। গত কয়েক বছর পূর্বে রেলের পাটাতন হিসাবে সিমেন্টের ¯িøপার বা পাটাতন দেওয়ার কারণে রেলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুটওভার ব্রীজটির উচ্চতা কমে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পাটাতন উচু করার সাথে ফুটওভার ব্রীজটির উচ্চতা না বাড়ানোর কারণে বর্তমানে ব্রীজের উচ্চতা ১৫ ফুট ৩ ইঞ্চিতে নেমে আসে। অপরদিকে বর্তমানে ট্রেনের উন্নত কোচগুলোর উচ্চতাও একটু বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কোচ ও ব্রিজের পার্থক্য একবারেই কমে যায়। এতে করে ট্রেন যখন এই ব্রিজটি অতিক্রম করে ঠিক তখনি ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমনকারী অতিরিক্ত যাত্রীরা নিজেদের অজান্তইে ব্রিজের পাটাতনের সাথে ধাক্কা লেগে প্রান হারায়।
সূত্রে আরো জানা, গত ২০ ফেব্রæয়ারী রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী আন্তঃনগর দ্রæতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাণীনগর ষ্টেশন অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ছাদে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ৭জন যাত্রী নিজেদের অজান্তেই এই ব্রিজের পাটাতনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ছিটকে পরে ঘটনাস্থলেই ৪জন এবং হাসপাতালে আরো ১জনসহ মোট ৫জন নিহত হয়। এ সময় আহত হয় আরো দু’যাত্রী। এই প্রাণহানীর ঘটনার পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তারা ঘটনাস্থলে এসে ব্রিজটি দ্রæত সংস্কার করার কথা জানান। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরের আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সর্তকতামূলক একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় ব্রিজটিতে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন ২/৩ মাসের মধ্যেই ব্রীজটি সংস্কারের মাধ্যমে উচু করা হবে কিন্তু বর্তমানে ব্রিজটি উচু না করে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো ট্রেন যাত্রীদের যাত্রা নিরাপদ করার লক্ষে গতকাল মঙ্গলবার থেকে এই মরণ ফাঁদ নামক ফুটওভার ব্রিজটি অপসারন করার কাজ শুরু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্রিজ প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের যেন এই ফুটওভার ব্রিজের সাথে ধাক্কা লেগে প্রাণ হারাতে না হয় সেই লক্ষ্যে ব্রিজের উপরের অংশটুকু অপসারন করা হচ্ছে। তবে ঈদের পর দরপত্রের মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় ব্রিজটির উপরের অংশটি নির্মাণ করে তা আবার জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন