নওগাঁয় অকাল গর্ভপাতে মারা গেল একই গর্ভে ছয় বাচ্চা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় এক প্রসূতির অকাল গর্ভপাতে চারমাস বয়সের ছয়টি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। দুই দফায় বাচ্চাগুলো স্বাভাবিক ভাবে প্রসব হয়। তবে ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর পরই বাচ্চাগুলো মারাগেছ। বাচ্চা ছয়টির মধ্যে তিনটি মেয়ে ও তিনটি ছেলে। নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে বাচ্চাগুলো এক নজর দেখতে শত শত লোকজন ভীড় করেন। ওই গৃহবধু নওগাঁ শহরের খাস-নওগাঁ মহল্লার সেলুনকর্মী শেখ ওরফে রানা শেখের স্ত্রী মৌসুমি আক্তার (২২)। গৃহবধুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত আট বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সন্তান নাই। দীর্ঘ সময় পর মৌসুমি আক্তার গর্ভবর্তী হয়। গত এক মাস আগে সদর হাসপাতালে আলট্রাসোনোগ্রাম করে জানতে পারেন তার গর্ভে ছয়টি বাচ্চা আছে। গত শুক্রবার সকালে মৌসুমি আক্তারের পেটে ব্যাথা শুরু হয়। অকাল গর্ভপাতে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়িতে একটি মৃত সন্তান প্রসব হয়। এরপর সারাদিন বাড়িতেই ছিলেন। তবে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে রাত ৯টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকাল ৯ টার দিকে স্বাভাবিক ভাবে পাঁচটি শিশু ভুমিষ্ঠ হয়। প্রসবকালীন সময়ে চিকিৎসককে সহযোগিতা প্রদানকারী সিনিয়র স্টাফ নার্স জাহানারা বেগম জানিয়েছেন ভুমিষ্ঠ হওয়ার বাচ্চাগুলো জীবিত ছিল। তাদের স্পন্দন লক্ষ করা গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে বাচ্চাগুলো ক্রমেই মৃত্যুবরন করেছে। ছয়টির মধ্যে তিনটি মেয়ে ও তিনটি ছেলে সন্তান। তবে প্রসুতি সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বাচ্চাগুলো একনজর দেখতে হাসপাতালে শতশত নারী-পুরুষ ছুটে আসেন। শহরের পাটালীর মোড় এলাকার সাদিয়া আরেফিন বর্ষা বলেন, ছয়টি বাচ্চা প্রসব হয়েছে শুনে একনজর দেখার জন্য এসেছেন। জীবন দশায় তিনি তিনটা পর্যন্ত বাচ্চা হতে দেখেছেন। তবে এতোগুলো বাচ্চা একসাথে দেখেননি। আল্লাহ সব কিছুই পারেন। নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম বলেন, পেটে একের অধিক বাচ্চা থাকাটা অস্বাভাবিক। তখন গর্ভবতীকে আরো বেশি বেশি সর্তক থাকতে হয়। আর পেটে বেশি বাচ্চা থাকলে অকাল গর্ভপাত হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। বিশেষ করে তলপেটে কোন ধরনে আঘাত, উঠতে-বসতে গিয়ে আঘাত, দীর্ঘ সময় সফরের কারণে অকাল গর্ভপাত হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, গত এক মাস আগেও তারা আমার কাছে এসেছিল। যেহেতু এটি প্রথম গর্ভবর্তী এবং বাচ্চার সংখ্যাও অধিক। তাই তাকে সাবধানে থাকার এবং বেশি বেশি যতœ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। বাচ্চার সংখ্যা অধিক হওয়ার কারণে স্বত:স্ফূর্ত গর্ভপাত (Aspontaneous Abortion) হয়েছে। অর্থ্যাৎ নিজে নিজে গর্ভপাত হওয়া। ছয়টি বাচ্চা মারা গেছে। প্রতিটির ওজন প্রায় ৬০-৭০ গ্রাম। তবে প্রসূতি সুস্থ আছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget