এস রহমান সোহেল, ভোলা জেলা প্রতিনিধিঃ ভোলা সদরের অ্যাসিড নিক্ষেপে দগ্ধ মালা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। দীর্ঘ কয়েকমাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিল বোন ও তার মা বাবা কে নিয়ে বেচে থাকার সংগ্রামে। কিন্তু মালার যে সে আশা পুরন হলো না, বখাটের এসিড নিক্ষেপের ভয়াবহতা ছিল জলন্ত আগুনের মতো। বেঁচে থাকার জন্য মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অ্যাসিড দগ্ধ তানজিম মালা (১৬) গতকাল রাতে অবশেষে ব্যর্থ হয়ে জগতের মায়া মমতা ছেড়ে চলে গেল না ফেরার দেশে।
শনিবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানী সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাড়ি জমান অ্যাসিড দগ্ধ তানজিম মালা। এদিকে, তানজিম মালার মৃত্যুর ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শোকের মাতম নেমে আসে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে দিবাগত রাতে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিগলদী ইউনিয়নে ঘুমন্ত অবস্থায় মহব্বত নামে এক বখাটে এসিড নিক্ষেপ করে তানজিম (১৬) ও তার ছোট বোন মারজিয়ার (৭) ওপর। এঘটনায় পরদিন ভোলা সদর মডেল থানায় তানজিম মালার ‘‘মা’’ মামলা করেন। এসিড দগ্ধ দুইবোনকে উদ্ধার করে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) পাঠানো হয়। এরপরে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠায়।
এসিড নিক্ষেপের ঘটনার দিন খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন। এসময় তিনি বলেন, অ্যাসিড সন্ত্রাাসীদের গ্রেফতার করার জন্য চেষ্টা চলছে। এঘটনায় জড়িতরা খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার হবে।
গত ২৬ মে অ্যাসিড নিক্ষেপের মূলহোতা মহব্বত হাওলাদার অপুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞেসায় অ্যাসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করে মহব্বত হাওলাদার অপু। গ্রেফতারকৃত আসামি মহব্বত হাওলাদার অপু ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ মানিক মিয়ার ছেলে। অপু ভোলা সরকারি কলেজের ইকোনোমিক্স বিভাগের অনার্সের ছাত্র।
এঘটনায় জড়িত মহব্বত হাওলাদার অপুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাাইব্যুনালের ৯/৪ (১), ৩০ ধারার মামলায় জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। পরদিন ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১৬৪ ধারায় অ্যাসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করে মহব্বত হাওলাদার অপু।
তানজিম মালার মরদেহ (৮জুলাই) বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিগলদী ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.