নওগাঁর রাণীনগরে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদের লোভে অন্ত:সত্বা চায়নাকে হত্যার চেষ্টা \ হাসপাতালের শয্যায় চিকিৎসাধীন চায়না

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে পারইল ইউনিয়নের রাতলাই গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের রেখে যাওয়া সম্পদই কাল হলো তার স্ত্রী চায়নার জীবনে। আবুল কালামের পরিবারের লোকজন শুক্রবার রাতে চায়নাকে হত্যার চেষ্টা করলেও বেঁচে যায় চায়না। বর্তমানে চায়না বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মোছা: চামেলী আক্তার চায়না (৩৫) পাশের আদমদীঘি উপজেলার উজ্জ্বলতা গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে।


চায়নার মা মোছা: আমিজা বেগম বলেন, চায়নার কোন সন্তান ছিলো না। সে বর্তমানে দুই মাসের অন্ত:সত্বা। আমার জামাই আবুল কালাম গত ১জুন তারিখে মারা যায়। গত বৃহস্পতিবার আমার জামাইসহ তার পরিবারের মৃতদের উদ্দেশ্যে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমার জামাই তার বাবার ১০বিঘা জমি ভাগ পায়। এছাড়াও জামাই বিদেশ থাকাকালীন অবস্থায় আমার মেয়ের নামে ব্যাংকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা জমা রাখে। আর এই সব সম্পদই আমার মেয়ের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার জামাই মারা যাবার পর থেকে আমার মেয়ের কাছে থাকা সোনার অলংকার, টাকা ও জমিগুলো হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মেয়ের ননদ শাকিলা ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুস সালাম পিন্টু, দেবর আলীম ও তার স্ত্রী রিনাসহ এই পরিবারের সবাই আমার মেয়েকে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।


এই বিষয়ে তারা আমাকেসহ আমার মেয়েকে একাধিকবার মারপটিও করেছে। ঘটনার দিন শুক্রবার দিবাগত রাতে আমি ও আমার মেয়ে চায়না একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু ভোর রাতে বাহিরের হট্টগোলে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি আমার ঘরের দরজা বাহির থেকে লাগানো এবং আমার কাছে আমার মেয়েও নেই। এরপর শুনতে পাই বাড়ির পাশে পুকুরে বস্তাবন্দি অবস্থায় আমার মেয়ে চায়না। এই পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে রাতের আধাঁরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে দেয়। কিন্তু আল্লাহ আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এখন আমার মেয়ে হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি এই পরিবারের সকল নরপশুদের দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি চাই।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এদিন সকালে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে পুকুরের পাশ দিয়ে আসার সময় মুসল্লিরা দেখতে পায় যে পুকুরের পাশে বস্তার মধ্যে কি যেন নড়াচড়া করছে। এরপর বস্তা খুলে তারা দেখতে পান যে বস্তার মধ্যে আধা মরা অবস্থায় গৃহবধূ চায়না। এসময় চায়নার হাত,পা ও মুখ বাধা ছিলো। চায়নার মুখ দিয়ে ফেনা উঠছিলো। তার শরীরে মারপিটের একাধিক চিহ্নও দেখা গেছে। তখন আমরা চায়নাকে প্রথমে আদমদীঘি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাই। বর্তমানে চায়না সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।


স্থানীয়রা বলছেন, চায়না শান্তশিষ্ট একজন গৃহবধূ। এই পরিবারের লোকজন তার স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদগুলো গ্রাস করার জন্য পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই চায়নাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। তারা মারপিট করে চায়নার পেটের সন্তানসহ তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো কিন্তু তারা চায়নাকে মেরে ফেলতে পারেনি। এই পরিবারের লোকজন চায়নাকে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছিলো। আমরা এই পরিবারের সবার দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি চাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget