জাম ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, জিংক, কপার, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্যালিসাইলেটসহ অসংখ্য উপাদান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসে কর্মরত কৃষিবিদ মোহাম্মদ গোলাম মাওলার গবেষণায় জেনে নিন জামের নানা রকম স্বাস্থ্যগুণের কথা।
মানসিকভাবে সতেজ রাখে: জামে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা মানুষকে যোগায় কাজ করার শক্তি।
ডায়াবেটিস নিরাময়ে : ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম ভীষণ উপকারী। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জাম খাওয়ার ফলে ৬.৫ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিক কমে গেছে। এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি-এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ :জামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। যার জন্য এটা দেহে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি পূরণ করে এবং একই সঙ্গে ভিটামিন সি-এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া মুখের দুর্গন্ধ রোধ, দাঁত মজবুত, মাড়ি শক্ত এবং মাড়ির ক্ষয়রোধেও জামের জুড়ি নেই ।
হার্ট ভালো রাখে: জাম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদপিণ্ড ভালো রাখে। এছাড়া শরীরের দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে : জামে কম পরিমাণে ক্যালোরি থাকে বলে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করছেন, তাদের খাদ্য তালিকায় আসতে পারে জাম।
উচ্চ রক্তচাপ কমায় : পুষ্টিবিদদের মতে, জামে সেই সব উপাদান আছে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে কালো জাম : মানুষের মুখের লালার মধ্যে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ উৎপাদিত হয়, যা হতে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম নেয়। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া হতে মুখে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর জাম মুখের ভেতর উৎপাদিত ক্যান্সারের সহায়ক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নিরাময় করে আমাশয় : জামের কচি পাতার রস ২-৩ চা-চামচ একটু গরম করে ছেঁকে নিয়ে খেলে ২-৩ দিনের মধ্যে সেরে যায়।
বিছানায় মূত্রত্যাগের অভ্যাস দূর করে : বিব্রতকর এ অভ্যাসটির কারণে শিশু-বৃদ্ধ অনেকেই অসুবিধায় পড়েন। এই সমস্যা দূর করার জন্য ২-৩ চা চামচ জাম পাতার রস (বয়স অনুপাতে মাত্রা) ১/২ চা চামচ গাওয়া ঘি মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে খাওয়ালে এক সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপকার হবে।
দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে : যাদের মাড়ি আলগা হয়ে গিয়েছে, একটুতে রক্ত পড়ে, তারা জাম গাছের চামড়া গুঁড়া করে সেটা দিয়ে দাঁত মাজলে উপকার হবে।এছাড়াও জামে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ফাইটো কেমিক্যালস থাকায় এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও মৌসুমী সর্দি কাশি থেকে মুক্ত রাখে। পাশাপাশি এটি প্রতিরোধ করে ইনফেকশনের মতো সমস্যারও।
জাম খাওয়ার সময় সতর্কতা : কখনোই আধাপাকা জাম খাবেন না। এছাড়াও খালি পেটে জাম খাবেন না এবং জাম খাওয়ার পর দুধ খাবেন না। পাকা ফল ভরা পেটে খেলে অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকভাব হতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন