মান্দায় জবি’র সেই আইনের ছাত্রী মিমকে উপজেলা প্রশাসনের অর্থ সহায়তা প্রদান

এম এম হারুন আল রশীদ হীরা,মান্দা (নওগাঁ): নওগাঁর মান্দায় জবি’র আইনের সেই ছাত্রী শারমিন আক্তার মিমকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বই কেনা বাবদ ৫হাজার টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা সমাজ কল্যাণ পরিষদ ফান্ড থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান।
এসময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক (অব.) আবদুর রশিদ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তারেক এলাহী, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মামুনুর রশিদ, মিমের পিতা জামাল হোসেন মোল্লা, সাংবাদিকবৃন্দ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মিমকে কিছু নগদ অর্থ এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মিমকে কিছু নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।


একটি খামার প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মামুনুর রশিদ জানান, মিমের পরিবারকে সচ্ছলতা আনতে কোন জামানত ছাড়াই প্রথম অবস্থায় ১০হাজার টাকার ঋণ প্রদান করা হবে।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ সময় জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য এ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হল। আশা করি অন্যরাও সাধ্যমত এগিয়ে আসলে মিমের পড়াশুনার জন্য আর কোন চিন্তা করতে হবে না বলে তার বিশ্বাস।


জবির আরেক শিক্ষার্থী এবং মান্দা বিজ্ঞান ক্লাবের পক্ষে রায়হান বাবু এবং ঘাটকৈর গ্রামের রাজু সাহানা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর কন্যা ও এপিএস সাবিহা প্রামানিক সীমা মিমের পড়াশোর জন্য অর্থ সহায়তা করেবনে বলে জানা গেছে। এছাড়া নওগাঁ বারের সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াজেদ মিমের পড়াশুনার ব্যাপারে সহযোগিতার কথা বলেন। তাছাড়া ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি সামসুজ্জামানের পক্ষে মান্দা শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ ওবায়দুল্লাহ্ মিমের পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে সহযোগিতা করবেন বলে জানা গেছে। তিস্তা নিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক সরদার ফজলুল হক তার জবি প্রতিনিধির মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে মিমের ব্যাপারে কথা বলেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রায়হান বাবু তার ফেন্ড সাকের্েেলর সবাইকে এগিযে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন।


শারমিন আক্তার মিম সাংবাদিকদের জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তার কাছে অনেক ফোন আসছে। এছাড়া ইটালী প্রবাসি জনৈক ইয়াছিন ফোন দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে পড়াশুনার সম্পূর্ণ দায়িত্বভার এমন আশ্বাস এখনও পাওয়া যায়নি কারো কাছ থেকেই। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছি, যারা আমাকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং সহযোগীতা করার আশ্বাস দিচ্ছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। যেন শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি।


২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে মেধা তালিকায় ভর্তি হয়ে দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা মেধাবী ছাত্রী শারমিন আক্তার মিম গত ১০ জানুয়ারী থেকে প্রথম বর্ষে প্রথম সেমিষ্টারে ক্লাস শুরু করে। সাড়ে তিন মাস মেসে থাকার পর চরম অর্থ সংকটে পড়েন তিনি। দরিদ্র রিকসা চালক পিতা জামাল হোসেনের পক্ষে খরচ বহন করা সম্ভব না হওয়ায় গত এক মাস থেকে বাধ্য হয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছেন মিম ।


নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা সদর ইউনিয়নের দোসতি গ্রামে বাড়ি মিমদের। মাত্র চার শতাংশের জমির মালিক তার রিকসা চালক পিতা জামাল হোসেন। আর সেখানে টিন ও বুনের বেড়া দিয়ে তৈরি একটি ছোট্র ঘরে বসবাস করেন স্ত্রী মোরশেদা খাতুন, দুই মেয়ে শারমিন আকতার মিম ও শাহারা আফরীন। শাহারা আফরিন মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। হত-দরিদ্র পরিবারটি প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় এতোদিন মেয়ে দুটিকে পড়াশুনা করিয়েছেন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget