জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে মেধাবী ছাত্রী মিমের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে সংশয়

আঁধার ঘরে চাঁদের আলো


হারুন আল রশীদ হীরা,মান্দা (নওগাঁ): নওগাঁর মান্দায় উপজেলার মান্দা সদর ইউনিয়নের ঘাটকৈর গ্রামের এক হত-দরিদ্র পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা অদম্য মেধাবী ছাত্রী মোছাঃ শারমিন আক্তার মিমের। চলতি ২০১৮ সালের অর্নাস ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের (খধি ভধপঁষঃু ড়ভ ষধহফ সধহধমবসবহঃ ধহফ ষধ)ি আইন ফ্যাকাল্টি অব ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং আইন শাখায় ৩৯৬ মেধা তালিকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে মেধাবী ছাত্রী শারমিন আক্তার মিমের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এখন তার রিক্সাচালক পিতা ও পরিবার রয়েছে চরম সংশয়ে। হত-দরিদ্র পরিবারের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না তার এ উচ্চ শিক্ষার জন্য হাজার হাজার টাকার যোগান দেওয়া। কারণ নুন আনতে যে সংসারে পানতা ফুরায়। তাদের আবার লেখাপড়া! দু’বেলা যে পরিবারের খাবার জোটানোই সবচেয়ে বড় সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ। এতদিন অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে এসেছেন। সেখানে ঢাকায় রেখে তাকে কিভাবে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন সে চিন্তায় তার দরিদ্র পিতা-মাতার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কে নেবে অসহায় ও অভাবী হত-দরিদ এক পরিবারের মেয়ে মিমের লেখাপড়ার এ গুরু দায়িত্ব? কিভাবে সম্ভব উচ্চ শিক্ষার জন্য তার অদম্য মেধার মূল্যায়নের। এত সুযোগের পরও কি তার উচ্চ শিক্ষার পথ চিরতরে বন্ধ হতে চলেছে এ প্রশ্ন মিম ও তার পরিবারের।


মিমের মা মোর্শেদা খাতুন জানান, তার দু’ মেয়ে। বড় মেয়ে মোছাঃ শারমিন আক্তার মিম এবং ছোট মেয়ে শাহারা আফরীন। দু’ মেয়ের মধ্যে মিম ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। শাহারা আফরীন মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজে বর্তমানে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। তাদের কোন জমি বা অর্থ-সম্পদ নেই। জমি বলতে তার স্বামীর পৈতৃক সুত্রে পাওয়া ঘরভিটাসহ মাত্র ৪শতক জমি রয়েছে। ঘর বলতে একটি। তাও ভাঙ্গাচোরা, টিন ও বনের বেড়া দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘর। এ ঘরেই তাদের বসবাস। তার স্বামী জামাল হোসেন বর্তমানে ঢাকায় রিক্সা চালায়। তিনিও এক সময় চট্রগামে এক গার্মেন্টসে কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় তার স্বামী রিক্সা চালিয়ে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এরপরও অভাবের সংসারে বড় মেয়ে মিম ২০০৯ সালে ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫১০ নম্বর পেয়ে বৃত্তিলাভ করে। পরে মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজ থেকে ২০১২ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) এ-প্লাসসহ বৃত্তিলাভ করে। অভাব ও দরিদ্র তাকে দমাতে পারেনি কখনো। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় এ-প্লাস অর্জন করে। তবে ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় নওগাঁ বিএমসি মহিলা কলেজ থেকে ৪.২৫ অর্জন করায় তার এ ফলাফলের জন্য মিমের মনে একটু কষ্ট রয়ে গেছে। অর্থের অভাবে এবং নানা চিন্তায় চিন্তায় তার এ অবস্থা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবুও একেবারের জন্যও দমে যায়নি মিম তা না বললেই চলে। অধ্যয়ন, সাধনা এবং কঠোর পরিশ্র্রমে চলতি ২০১৮ সালের অর্নাস ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের (খধি ভধপঁষঃু ড়ভ ষধহফ সধহধমবসবহঃ ধহফ ষধ)ি আইন ফ্যাকাল্টি অব ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং আইন শাখায় ভর্তির সুযোগ সে অর্জন করেছে। এছাড়া মিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট এ ও ই’তে এবং চট্রগাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট বি ও ডি’তে ও ভর্তি সুযোগ পেয়েছিল। বর্তমানে সে প্রথম সেমিষ্টারে ভর্তি হয়ে অধ্যয়ন করছে। কিন্তু ঢাকা শহরে রেখে আমাদের মতো অসহায় ও হত-দরিদ্র পরিবারে পক্ষে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি দেশ বিদেশে অবস্থারত সমাজের উচ্চ বিত্তদের কাছে মেয়ে মিমের উচ্চ শিক্ষার জন্য অর্থ সাহায্য কামনা করেছেন। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ মোছাঃ শারমিন আক্তার মিম, পিতাঃ জামাল হোসেন, গ্রামঃ ঘাটকৈর, উপজেলাঃ মান্দা, জেলাঃ নওগাঁ। বিকাশ নম্বরঃ ০১৭৩৬৭৫৩৫৪৪।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget