নওগাঁ’র রানীনগরে আ:লীগ নেতা আজিমুদ্দিন খুন
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলায় খাস পুকুরের দখলকে কেন্দ্র করে নিহত আজিমুদ্দিনের জানাজায় এমপি ইসরাফিল আলমকে অংশগ্রহন করতে দেয়নি এলাকাবাসী। তিনি জানাজায় অংশগ্রহন করতে গেলে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হলে তিনি সেখান থেকে জানাজা না করে চলে যান।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রোববার দুপুরে দুর্বৃত্তদের লাঠি সোটা, লোহার রড ও হাতুড়ের আঘাতে গুরুতর আহত ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি আজিমুদ্দিন নিহত হয়। সোমবার সকালে নিহত আজিমুদ্দিনের জানাজায় স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলম উপস্থিত হয়। তাঁকে দেখে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে এলাকবাসীর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রনের বাহিরে যেতে লাগলে এমপি জানাজায় অংশ গ্রহন না করেই সেখান থেকে চলে যান।
নওগাঁ জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন জানান, রানীনগর উপজেলার করজগ্রাম সখিনপাড়া মসজিদের খাস পুকুরটি লীজ নিয়ে প্রায় ১৪/১৫ বছর থেকে মাছ চাষ করে আসছিলেন নিহত আজিমুদ্দিনের বড় ভাই শহিদ। কিন্তু হঠাৎ করে ২৭ মে রোববার দুপুর ২টায় সাহাদত হোসেন সায়েম, নাজমুল হক মাসুম, আব্দুল আজিজ, রহিমসহ ৩০/৩৫ জন মোটরসাইকেলযোগে ঐ পুকুরে যায়। সেখানে তারা স্থানীয় এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে বলে যে এই পুকুর তারা লীজ নিয়েছে এখন সেখানে মাছ ছাড়বো। এই ঘটনায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সায়েম ও তার দলবল লাঠিসোটা, লোহার রড, হাতুড়ী দিয়ে আক্রমন করে। এতে আজিমুদ্দিনসহ তার ভাই শহিদ, জালাল ও তাদের মা মানিকজানসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।এদের মধ্যে আজিমুদ্দিনের অবস্থা বেশী আশংকাজনক হওয়ায় তাকে প্রথমে রানীনগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সায়েমের লোকজন তাকে ভর্তি করতে না দিলে সেখান থেকে পাশ্ববর্তী বগুড়া জেলার আদমদীঘি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে নওগাঁ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যার পর অনুমান সাড়ে ৭টায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের গাড়ি থেকে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযুক্ত সাহাদত হোসেন সায়েম, নাজমুল হক মাসুম, আব্দুল আজিজ ও রহিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে রানীনগরে সায়েমের অফিস তল্লাশী করে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত সাহাদত হোসেন সায়েম সদর উপজেলার চকবুলাকী গ্রামের এচাহাকের পুত্র, নাজমুল হক মাসুম রানীনগর উপজেলার পশ্চিমবালুভরা গ্রামের জালাল উদ্দিনের পুত্র, আব্দুল আজিজ রানীনগর উপজেলার মধ্যরাজাপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র এবং মো. রহিম পশ্চিম বালুভরা গ্রামের রাজ্জাকের পুত্র। এ ব্যাপারে রাণীনগর থানায় নিহতের বড় ভাই শহিদুল বাদী হয়ে এক হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন