নওগাঁর মহাদেবপুরে আদিবাসী নারী শ্রমিকদের কদর বাড়লেও দূর হয়নি মজুরী বৈষম্য

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ): চলতি মৌসুমে ধান কাটার কাজে পুরুষ শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিকদের কদর বেড়েছে। তবে কদর বাড়লেও দূর হয়নি মজুরী বৈষম্য। কৃষি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি এসব নারী শ্রমিক সমান কাজ করলেও মজুরী পাচ্ছেন প্রায় অর্ধেক। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আদিবাসী উন্নয়ন কেন্দ্রের হিসাব মতে মহাদেবপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে উড়াও, সাঁওতাল, মুরমু, মালী, মহালী, পাহানসহ বিভিন্ন স¤প্রদায়ের প্রায় ২০হাজার আদিবাসী বাস করে। এসব আদিবাসী পরিবারের প্রায় ৫-৭ হাজার নারী শ্রমিক কৃষি কাজের সাথে জড়িত রয়েছে। এ এলকায় বসবাসকারী আদিবাসীদের প্রায় সবাই হতদরিদ্র। হতদরিদ্র এসব পরিবারে মূলত নারী শ্রমিকরা কৃষি ক্ষেতে কাজ করে পরিবারের সদস্যদের জীবন যাপনের খরচ যোগায়। এদের নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করেন। এই শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে তারা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। একজন পুরুষ শ্রমিকে একদিন ধান কাটা কাজের জন্য ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা মজুরী পেলেও আদিবাসী নারী শ্রমিককে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ নারীর প্রতি সকল বৈষম্য বিলুপ্তির ঘোষনা দিলেও নারী শ্রমিকদের মজুরী দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ঘোষনা মানা হচ্ছে না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কারণে যুগ যুগ ধরেই নায্য মজুরী প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে আদিবাসী নারী শ্রমিকরা। দওপাড়ার আদিবাসী নারী শ্রমিক শিখা পাহান জানান, তারা মাঠে পুরুষের পাশাপশি সমান ধান কাটা কাজ করেও মাজুরী পাচ্ছেন প্রায় অর্ধেক। ধর্মপুরের শবিতা পাহান জানান, শুধু মজুরী নয় নারী বলে একজন শ্রমিকের পাপ্য অন্যান্য সুবিধা থেকেও তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়। পুরুষ শ্রমিকদের তিনবেলা খাবার দিলেও তাদেরকে দেওয়া হয় মাত্র এক বেলার জল খাবার। আদিবাসী উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক দিপংকর লাকড়া জানান, এ অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসীদের মূলত নারী শ্রমিকদের রোজগারেই পরিবার চলে। আর নারী শ্রমিকরা নায্য মজুরী না পাওয়ায় অভাব তাদের পিছু ছাড়েনা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget