এম এম হারুন আল রশীদ হীরা, মান্দা (নওগাঁ): নওগাঁর মান্দায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রসাদপুর শাখার ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনৈতিক দাবী (উৎকোচ), দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২রা এপ্রিল দৈনিক রাজবার্তা পত্রিকায় প্রকশিত সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এ বিষয়ে ২ সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন রাকাব প্রধান কার্যালয়ের সহকারি মহাব্যবস্থাপক রনজিত কুমার সেন এবং নওগাঁ জোনাল ব্যবস্থাপক মেজবাহুর রহমান। গত সোমবার বেলা ১টার দিকে ঐ তদন্ত কমিটি প্রসাদপুর শাখা অফিসে উপস্থিত লোকজনের সামনে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতিবাজ শাখা ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান, সিনিয়র অফিসার রতন কুমার, ফিল্ড সুপারভাইজার রেজাউল ইসলাম, অভিযোগকারি ব্যাংক গ্রাহক “রায়হান ডেইরী ফার্মের” সত্তাধিকারী এমদাদুল হক এবং হয়রানির শিকার হারুন অর রশিদ, অছিম উদ্দিনসহ আরো অনেকে। শাখার নিচে আরো অনেক গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শাখা ব্যবস্থাপক টালবাহানা করে তার দুর্নীতি ঢাকার চেষ্ঠা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফিল্ড সুপারভাইজার রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি একজন ঋণ পাওয়ার যোগ্য গ্রাহক বলে আমি তার ঋণ ফাইলে সুপারিশ করেছি। কিন্তু নতুন শাখা ব্যবস্থাপক এসে ঐ ঋণ বন্ধ করে দেন।
নওগাঁ জোনাল ব্যবস্থাপক মেজবাহুর রহমান জানান, প্রসাদপুর শাখার ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অনেকাংশে সত্য বলে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। অচিরেই তদন্ত রিপোর্ট দাখিল ও প্রকাশ করা হবে।
রাকাব প্রধান কার্যালয়ের সহকারি মহা ব্যবস্থাপক ও প্রধান তদন্ত কর্তকর্তা রনজিত কুমার সেন গ্রাহক এদদাদুল হকের ঋণের ফাইল দেখে বলেন, দলিল সম্পাদন এবং পে-টু ক্যাশ লেখার পরেও কেন ঋণ বিতরণ করা হয়নি, তা তার বোধগম্য হচ্ছে না। এ কারণে অভিযোগের সত্যতা কিছটা হলেও পাওয়া যায়। তবে তদন্ত রিপোর্ট আগামী ৭/৮ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা হবে। তার আগে কিছু বলা যাবে না বলেও তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় মান্দা উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে ফসলসহ গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষতি হয়। বন্যার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার ব্যাংকগু–লোকে ঋণ দিতে বিশেষ নির্দেশনা দেন। চলতি বছর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রসাদপুর শাখার জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের জন্য বরাদ্দ আসে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা গত ২১ জানুয়ারী প্রসাদপুর শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। অনেক কৃষক চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে জমির দলিলপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে নিয়ম ও বিধি মোতাবেক আবেদন করে কোন ঋণ পাননি। তার দাবীকৃত মোটা অংকের টাকা না দেওয়ায় সব ফাইল আটকে দেওয়া হয়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হেেয়ছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন