প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বর্তমানে বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় আসীন।
ভবিষ্যতেও এই দুই দেশ সব সহযোগিতা বিদ্যমান রাখবে এবং বাংলাদেশ-ভারতের এ সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সামনে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের মডেল হিসেবে গণ্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে অবস্থিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের সুযোগ করে দেওয়ায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষসহ দেশটির জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাঙালির জীবনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান ও গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিটি বাঙালির জীবনে তিনি উজ্জ্বল বাতিঘর।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কবিগুরুর হাতে গড়া এক অনন্য প্রতিষ্ঠান এই শান্তিনিকেতন। প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে বৃহত্তর বিশ্বকে গ্রহণের উপযুক্ত করে তোলার জন্য জ্ঞানদান করার উদ্দেশে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক পুরানো। ১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতী আমাকে দেশিকোত্তম ডিগ্রি প্রদান করে। আমার ইচ্ছে ছিল এখানে বাংলাদেশ বিষয়ে চর্চার জন্য একটি আলাদা জায়গা থাকুক।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে আমার ভারত সফরের সময় এই ভবনটি স্থাপনের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এটি আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, ভারত সরকার এবং সর্বোপরি ভারতের বন্ধুপ্রতীম জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি কর্মের বিভিন্ন দিক স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বেশি কিছু বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি শুধু এটুকুই বলব, প্রতিটি বাঙালির জীবনে তিনি উজ্জ্বল বাতিঘর। আমাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, দ্রোহ ও শান্তিতে রবীন্দ্রনাথ থাকেন হৃদয়ের কাছের মানুষ হয়ে। তার সৃষ্টির ঝর্ণাধারায় আমরা অবগাহন করি প্রতিনিয়ত।
এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমৃত্যু স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত উদারনৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। কবিগুরুর মত তিনিও বিশ্বাস করতেন যে বৈরিতার অবসান না হলে কখনই এই পৃথিবী সমৃদ্ধ হবে না। তাই তিনি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়’ এ নীতিকে গ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র হিসেবে।
তিনি আরো বলেন, তার অনুসৃত নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশসমূহ বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আমাদের উভয় দেশের মধ্যে হাজার বছরের অভিন্ন ঐতিহাসিক, সামাজিক, ভাষিক, সাংস্কৃতিক ও আত্মিক বন্ধন বিদ্যমান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন