বগুড়া: ঢাকায় প্রিন্টিং জটিলতায় আটকে আছে বগুড়ার প্রায় দশ হাজার আবেদনকারীর পাসপোর্ট। দিনের পর দিন অফিসে গিয়েও তারা পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। এতে বিদেশ গমনে অনেকেই চরম অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন। নতুন পাসপোর্ট তৈরি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নবায়নের জন্য জমা দেয়া এসব আবেদন ২ মাসেরও বেশি সময় থেকে পড়ে আছে ঢাকায়।
বগুড়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) শরিফুল ইসলাম জানান, অতি শিগগিরই সংকট কেটে যাবে বলে আমরা আশা করছি। এখন শুধু জরুরি পাসপোর্টগুলো বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে প্রিন্টিং হয়ে প্রতিদিন বগুড়ায় যে পরিমাণ পাসপোর্ট আসতো কয়েক মাস ধরে সেটি কমতে থাকে। দুই মাস ধরে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পাসপোর্ট পেতে প্রতিদিন শত শত আবেদনকারী অফিসে ভিড় করছেন।
পাসপোর্ট অফিসের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রিন্টিং জটিলতার কারণে ঢাকা থেকে নিয়মিত পাসপোর্ট সরবরাহ না করায় বগুড়ার প্রায় ১০ হাজারের মতো পাসপোর্ট আটকে আছে। বগুড়া অফিস থেকে প্রতিদিন ১৮০ থেকে ২০০টি পাসপোর্টের আবেদন জমা হতো এবং একই পরিমাণ হস্তান্তর করা হতো। বর্তমানে সমস্যার কারণে গড়ে ২০টি পাসপোর্টও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন বগুড়া অফিসে দুই থেকে তিন শতাধিক পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়ে। তবে এই সংখ্যা বৃহস্পতিবার একটু কম হয়। এখন একদিকে আগের অনেক পাসপোর্ট সরবরাহ করা যাচ্ছে না, অন্যদিকে প্রতিদিন নতুন আবেদন জমা পড়ছে। শুধু আবেদনগুলোই ভেরিফিকেশন শেষে পাসপোর্ট প্রদানের জন্য বগুড়া অফিস থেকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ পাসপোর্ট ৩০ কার্যদিবসে এবং জরুরি পাসপোর্ট ১৫ কার্যদিবসে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু প্রিন্টিং জটিলতায় জরুরি ছাড়া অন্য পাসপোর্ট দেয়া যাচ্ছে না। আগে ঢাকা থেকে প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ দিন পাসপোর্টের বই আসত। এখন সেখানে সপ্তাহে দু’দিন বই আসছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, পাসপোর্ট পেতে সেখানে আবেদনকারীরা ভিড় করছেন। অনেকেই অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে নিজের পাসপোর্টের খোঁজ নিতে চেষ্টা করছেন। পাসপোর্ট না পেয়ে অফিসের লোকজনের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের বাকবিতণ্ডা হতেও দেখা গেছে।
বিদেশ ফেরত প্রবাসী আইনুল হক নামের একজন জানালেন তার সমস্যায় কথা। তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন পাসপোর্ট তৈরির জন্য আবেদন করেছেন। এখন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট না এলে তার টিকিট বাতিল হয়ে যাবে। নির্ধারিত সময়ের পর বিদেশ গেলে সেখানকার চাকরিও হারানোর শঙ্কা রয়েছে।
বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ার বাসিন্দা মইনুল চৌধুরী জানান, মার্চ মাসের মধ্যভাগে বগুড়া পাসপোর্ট অফিসে তার মেয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন। ডেলিভারির তারিখ দেয়া হয় ২৬ এপ্রিল। ওই তারিখের পর এখন পর্যন্ত দফায় দফায় অফিসে গেলে জানানো হয় এখনও পাসপোর্ট আসেনি। পাসপোর্ট এলে আমাকে মোবাইলে ম্যাসেস দেয়া হবে বলে। আজ পর্যন্ত আমার কোনো ম্যাসেজ আসেনি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন