শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচ, টান টান উত্তেজনা গ্যালারী জুড়ে। জয় সেলিব্রেশনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সানরাইজার্সের সমর্থকরা। কিন্তু একি! পাশার দান উল্টে সেই সেলিব্রেশন করছে চেন্নাই! কি পাঠক চমকে উঠলেন? চমকানোর কিছু নেই। ঘটেছে এমনই। হায়দরাবাদের সেলিব্রেশনকে একাই টেনে নিজেদের উল্লাসের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন ফাফ ডুপ্লেসি।
ম্যাচের এক পর্যায়ে বল ও রানের পার্থক্য ছিল ৩০। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাঁচ বল ও দুই উইকেট হাতে রেখেই ফাইনালে পৌছে যায় দুই বছর নিষিদ্ধ থাকা চেন্নাই। এমন ম্যাচে হারের জন্য পুরো দায়ভার নিতে হবে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে। তার এক ওভারে ২০ রানেই ম্যাচে ফেরে চেন্নাই। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে আসার আগে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ বলে ৪৩ রানের। সেখানে ওভার শেষে রান চলে আসে ১২ বলে ২৩ রান।
মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই। যদিও ওয়াংখেড়েকে বলা হয় রান প্রসবিনী। কিন্তু চেন্নাইয়ের বোলারদের তোপে ১৩৯ রান করতে সক্ষম হয় হায়দরাবাদ।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই শিখর ধাওয়াকে হারিয়ে হায়দ্রাবাদের বিপর্যয় শুরু। ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি। তবে সাত নম্বরে নেমে ব্র্যাথওয়েট ২৯ বলে ৪ ছক্কা ও ১ চারে অপরাজিত ৪৩ রান করেন। এছাড়া ইউসুফ পাঠান ও কেন উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান করে।
চেন্নাইয়ের পক্ষে ডোয়াইন ব্রাভো ২টি, চাহার, লুঙ্গি, ঠাকুর ও জাদেজা প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এদিন সাবিক আল হাসান ব্যাট এবং বল দুই বিভাগেই ব্যর্থ। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০ বলে ২ চারে ১২ রান করেন। বল করে ২ ওভারে ২০ রান দিয়েছেন।
জয়ের জন্য ১৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এক সময় পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল চেন্নাই। শেন ওয়াটসন ফিরে যান কোনো রান না করেই। সুরেশ রায়না ২২ রান করে বিদায় নিলে বিপদে পড়ে যায় চেন্নাই। সেই বিপদকে আরও বাড়িয়ে তোলেন আম্বাতি রাইডু (০), মহেন্দ্র সিং ধোনি (৯), ডোয়াইন ব্র্যাভো (৭) ও রবীন্দ্র জাদজারা (৩)।
যদিও একপ্রান্ত আঁকড়ে ধরে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ফাফ ডু প্লেসি। দীপক চাহার ১০ রান করে ডু প্লেসিকে কিছুটা সঙ্গ দেন। এরপর হরভজন সিংও আউট হয়ে যান ২ রান করে। সর্বশেষ শার্দুল ঠাকুর প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়ান। ৫ বলে তিনি খেলেন ১৫ রানের ইনিংস। অন্যদিকে ফাফ ডু প্লেসি ৪২ বলে অপরাজিত থাকেন ৬৭ রানে। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
সন্দ্বীপ শর্মা, সিদ্ধার্থ কাউল এবং রশিদ খান নেন ২টি করে উইকেট। ভুবনেশ্বর কুমার ১টি, সন্দ্বীপ শর্মা ২টি, সিদ্ধার্থ কাউল ২টি করে উইকেট নেন।
আসরটা মোটেও ভালো যাচ্ছিল না ডু প্লেসির। একাদশেও ছিলেন না নিয়মিত। এর আগে মাত্র চার ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। রান করেছিলেন ৮৫। কিন্তু ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচকেই আসল মঞ্চ বানালেন।
২০১০ ও ২০১১ টানা দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চেন্নাই। তবে শেষ দুই আসরে নিষেধাজ্ঞার কারণে ছিল না ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। নির্বাসন কাটিয়ে ফিরেই ফাইনালে জায়গা করে নিল অন্যতম ফেভারিটরা। এনিয়ে ৭ বারের মতো আইপিএলের ফাইনালে উঠলো চেন্নাই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন