গর্ভনিরোধক পিল, সাধারণত “পিল” নামে পরিচিত, গর্ভাবস্থায় প্রতিরোধ করার একটি হরমোন ভিত্তিক পদ্ধতি। এছাড়া পিল অনিয়মিত মাসিক, মাসিক এর ব্যথা কমানো এবং প্রিমেস্টেরিয়াল সিন্ড্রোম (পিএমএস) সাহায্য করে। জন্মনিয়ন্ত্রক ঔষধগুলি ওভুলেশন (ovulation) প্রতিরোধ করে কাজ করে। কোন ডিম উত্পাদিত হয় না, তাই শুক্রাণু ডিম ফ্যাটিলাইসড করতে পারেনা। ফলে গর্ভাবস্থা ঘটেনা।
বাংলাদেশে জন্মনিরোধক উপায় গুলোর মধ্যে পিল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। বিভিন্ন ধরনের গর্ভনিরোধক ঔষধ রয়েছে। হরমোন ইস্ট্রজেন, প্রজেসট্রোন, বা উভয় সিন্থেটিক ফর্ম রয়েছে। সিনথেটিক প্রোজেসট্রোনকে প্রগাস্টিন বলা হয়। যৌগিক ঔষধে প্রগাস্টিন এবং ইস্ট্রজেন থাকে। “মিনি পিল,” এর মধ্যে রয়েছে প্রোগেস্টিন। যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় তবে পিল অত্যন্ত কার্যকরী, কিন্তু মানুষ ভুল করে কারণ। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৬ থেকে ১২ জনের গর্ভধারণ প্রতিবছরই এটি ব্যবহার করে বলে মনে করা হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) ৯ শতাংশে উভয় ধরনের পিলের জন্য ব্যর্থতার কারণ বলে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল যৌন সংক্রামক ব্যাধি (এসটিডি) প্রতিরোধ করতে পারে না। শুধুমাত্র একটি কনডম এই ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।জন্মনিরোধক পিল এর কিছু সাইড এফেক্ট বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া –
Intermenstrual spotting বা পিরিয়ড চলাকালিন সময় ভেজাইনাল ব্লিডিং ঃ অনেক সময় পিরিয়ড চলাকালিন সময়ে ভেজাইনাল ব্লিডিং দেখা দেয়। অবশ্য তা ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয় না।
Nausea বা বমি বমি ভাবঃ কিছু কিছু মহিলা প্রথমে পিল গ্রহণ করার সময় হালকা উষ্ণতা অনুভব করে। বমি বমি লাগে। কিন্তু কিছুক্ষণের পরে উপসর্গগুলি সাধারণত ঠিক হয়ে যায়। খাবার বা ঘুমানোর সময় পিল গ্রহণ করলে ভালো হয়। পরে যদি বমি বজায় থাকে তবে ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই মেডিক্যাল নির্দেশিকা নিতে হবে।
Breast tenderness বা স্তন আবেগপ্রবণতাঃ জন্ম নিয়ন্ত্রণের ঔষধগুলি স্তন বৃদ্ধি বা কোমলতা হতে পারে। এটি সাধারণত পিল খাওয়া শুরুর দিকে হয় আর পরে ঠিক হয়ে যায়। এ সময় বুকের মধ্যে ভালো ব্রা পরতে হয়। কোন কাপড় গুজে রাখা ঠিক হবেনা। আর বেশি করে ক্যফিন যুক্ত খাবার খেতে হবে।
Headaches and migraine বা মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেনঃ পিল খেলে অনেকের মাথা ব্যথা করে। বমি লাগলেও মাথা ব্যথা করতে পারে। যাদের আগে থেকে মাইগ্রেইন এ সমস্যা তাদের এটা বেশি হতে পারে। অবশ্য এটা চিরস্তায়ী হয় না। সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যায়।
Weight gain বা ওজন বৃদ্ধিঃ ক্লিনিক্যাল গবেষণা বলে পিল খেলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে স্তন ও কাঁধের চারপাশে।একটি পর্যালোচনা অনুযায়ী, অধিকাংশ গবেষণায় প্রোজেসটিন-মাত্র জন্মনিয়ন্ত্রণের সাথে ৬ বা ১২ মাসের মধ্যে 4.4 পাউন্ড (২ কেজি) এর নীচে গড় ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে।
Mood changes বা মানসিক পরিবর্তন : পিল খাওয়া শুরু করলে অনেক মহিলার মানসিক কিছু পরিবর্তন ঘটে। বিষন্নতায় ভুগে।
Missed periods বা অনিয়মিত মাসিকঃ পিল খেলে বিভিন্ন হরমোনাল কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তবে এতে খুব চিন্তার কিছু নেই। পরবর্তীতে ঠিক হয়ে যায়।
Eye changes বা চোখের পরিবর্তনঃ পিল খেলে যে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে এর সাথে চোখের কর্নিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় চোখে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পিল এর অনেক সমস্যা রয়েছে তবে তা কোনটাই স্থায়ী না। সব চেয়ে ভালো জন্মনিরোধক পদ্ধতি হছে, হ্যবিচুয়েল মেথুড তারপরেই পিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন